কৃষ্ণাকে দলীয় বৈঠকের পর বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। —নিজস্ব চিত্র।
আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে কোলাঘাটের শান্তিপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত। ইতিমধ্যে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান সেলিম আলিকে দুর্নীতির দায়ে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার পর বোল্ডার-দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতারও করা হয় সেলিমকে। এ বার কোপ পড়ল সেলিমের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ওই পঞ্চায়েতেরই উপপ্রধান কৃষ্ণা রায় সামন্তের উপর। তৃণমূলের বৈঠকের পর কৃষ্ণাকে দলের সমস্ত পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শান্তিপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি পঞ্চানন দাস বলেন, “কৃষ্ণা রায় সামন্তের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। এ নিয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর অঞ্চল কমিটির নেতৃত্ব বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে কৃষ্ণাকে দলের সমস্ত পদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের লিখিত প্রতিলিপি দলের পঞ্চায়েত, ব্লক এবং জেলা তৃণমূলের সর্বস্তরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” যদিও তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, এই খবর চাউর হতেই অভিযুক্ত উপপ্রধান গা ঢাকা দিয়েছেন। অন্য দিকে, প্রশাসন সূত্রে খবর, কৃষ্ণার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
বিপুল পরিমাণ বেনামি সম্পত্তি করা এবং লাগাম ছাড়া দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল পূর্ব মেদিনীপুরের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের অন্তর্গত শান্তিপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে। ‘এক ডাকে অভিষেক’ প্রকল্পে এমনই অভিযোগ পেয়ে ঘটনার অন্তর্তদন্ত শুরু করে দল। অভিযোগের সারবত্তা মেলায় সেলিমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে দল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গত বুধবার সেলিমকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পদত্যাগের পর গত বৃহস্পতিবার নিজের সাফাই দিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন সেলিম। ওই দিন রাতেই বোল্ডার দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই মামলায় পাকড়াও হয়েছেন শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি দিবাকর জানাও। এ বার সেলিম-ঘনিষ্ঠ কৃষ্ণার বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করল তৃণমূল।
তবে গোটা ঘটনাকেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের ‘আইওয়াশ’ বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “আমরা বার বার বলে আসছি যে, তৃণমূল দলটা আগাগোড়া দুর্নীতিতে যুক্ত। একের পর এক দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের নাম সামনে আসছে। তবে ওই নেতাদের দল থেকে বহিষ্কারের মাধ্যমে মানুষের কাছে নিজেদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি গড়ার যে চেষ্টা হচ্ছে, তা শুধুমাত্র চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল এর যোগ্য জবাব পাবে।”