কলেজ পরিচালন সমিতির সরকার মনোনীত প্রতিনিধি নির্বাচন ঘিরে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের নতুন-পুরনো দ্বন্দ্ব। সবং সজনীকান্ত মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সরকার মনোনীত প্রতিনিধির পদ থেকে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের অমূল্য মাইতিকে সম্প্রতি বাদ দেওয়া হয়েছে। তার বদলে সমিতির সরকার মনোনীত প্রতিনিধি হয়েছেন সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসা দুলাল দে। আর এই ঘটনাতেই বেজায় চটেছেন অমূল্যবাবু। স্থানীয় বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার অনুরোধেই তাঁকে সরানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলছেন অমূল্যবাবু।
অমূল্যবাবু বলছেন “দলে আসার পর থেকে মানস ভুঁইয়া স্বজনপোষণ করে ক্ষমতাবলে সর্বত্র নিজের লোকেদের স্থান দিচ্ছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘দুলাল দে সম্পর্কে মানস ভুঁইয়ার জামাইবাবু। শিক্ষা দফতরে মানসবাবু অনুরোধ করে দুলাল দে-কে কলেজের প্রতিনিধি করেছেন বলেই আমার ধারণা।”
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় বিধায়ক মানসবাবু। তিনি বলছেন, “দুলাল দে আমার আত্মীয় কি না সেটা বড় কথা নয়। উনি একজন শিক্ষিত যুবক। দীর্ঘদিন ওই কলেজের সঙ্গে যুক্ত। সে সব বুঝেই শিক্ষা দফতর তাঁকে কলেজ প্রতিনিধি করেছে। শিক্ষা দফতরে আমার অনুরোধ করার কোনও জায়গা নেই।”
মানসবাবু-সহ সবংয়ের একঝাঁক কংগ্রেস নেতা মাস কয়েক আগে তৃণমূলে যোগ দেন। তারপর থেকেই তৃণমূলের পুরনো কর্মীদের সঙ্গে সদ্য শাসকদলে আসা কর্মীদের বিবাদ ঘিরে একাধিকবার অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে নেতৃত্বকে। দু’পক্ষকে মিলেমিশে কাজ করার বার্তাও দিয়েছেন দলের নেতারা। তারপরেও যে অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি, এই ঘটনাতেই তার প্রমাণ।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্যবাবুর পাশাপাশি এত দিন ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সরকার মনোনীত প্রতিনিধি ছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রভাত মাইতি।
বুধবার রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে সবংয়ের সজনীকান্ত কলেজে একটি চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়, প্রভাত মাইতি ও দুলাল দে সমিতির সরকার মনোনীত প্রতিনিধির
পদে থাকবেন।
এ নিয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রভাতবাবু বলেন, “আমার কাছে একটি চিঠি এসেছে। চিঠি
থেকেই জেনেছি অমূল্যবূাবুর পরিবর্তে দুলাল দে-কে কলেজের সরকার মনোনীত প্রতিনিধি করা হয়েছে। এই ছন্দপতনের কারণ বুঝতে পারছি না।”
তৃণমূল নেতা অমূল্যবাবুকে বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আবু কালাম বক্সের কটাক্ষ, “অমূল্য মাইতি একটি স্কুলের সভাপতি। আবার তার ছেলেও একটি স্কুলের সভাপতি। এমন নজির খুব বিরল। এই নিয়ে কী কখনও কিছু বলেছি আমরা?”
তবে এই কোন্দল যে এখনই থামার নয়, তা বেশ বুঝতে পারছেন শাসকদলের নেতৃত্ব।