পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ভবন। —নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর চিকিৎসা পরিষেবা উন্নত করার লক্ষ্যে প্রতিটি জেলায় একাধিক সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো পাঁশকুড়াতেও তৈরি হয় সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল।
শুরু থেকেই ওই সব সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে পরিষেবার ঘাটতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে রোগী ও তাঁর পরিবারের লোকজন অভিযোগ তুলেছেন। তবে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে সেই অভিযোগ অন্য মাত্রা নিয়েছে ফোন পরিষেবাকে কেন্দ্র করে। জরুরি পরিষেবার আওতায় থাকা সত্ত্বেও এই হাসপাতালে এখনও ল্যান্ড ফোন পরিষেবা নেই। যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাঁর পরিবারের লোকদের।
২০১৬ সালে পাঁশকুড়ার পীতপুরে গড়ে ওঠে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। সুপার স্পেশ্যালিটি হলেও হাসপাতালে যোগাযোগের জন্য কোনও ল্যান্ড ফোন নম্বর না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রোগীদের। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালে ল্যান্ড ফোন না থাকায় কোন বিভাগের চিকিৎসক কবে আসবেন বা কবে তিনি অনুপস্থিত থাকবেন, হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা কত বা আদৌ গেলে সেখানে ভর্তি হওয়া যাবে কি না, সেই সব তথ্য আগে থেকে জানার সুযোগই নেই। চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে কোনও তথ্য জানতে হলে হাসপাতালে না এসে উপায় নেই। এতে দিন দিন বাড়ছে রোগীদের হয়রানি।
দাসপুরের জগন্নাথপুর গ্রামের সিদ্ধার্থ মাইতি বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে বাবাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের বহির্বিভাগে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু সেদিন সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকায় বাড়ি ফিরে যেতে হয়। হাসপাতালে ফোন না থাকায় আগে থেকে ওই চিকিৎসকের অনুপস্থিতি নিয়ে কোনও খবর নেওয়া যায়নি।’’ পাঁশকুড়ার মাইশোরার বাসিন্দা বিশ্বনাথ সামন্ত বলেন, ‘‘কোন দিন কোন চিকিৎসক আসবেন তা হাসপাতালে না এলে জানার উপায় নাই। রোগীদের স্বার্থেই হাসপাতালের ল্যান্ড ফোন থাকা জরুরি। তা হলে তাঁদের হয়রান হতে হয় না।’’
সমস্যার কথা স্বীকার করে হাসপাতালের সুপার শচীন রজক বলেন, ‘‘দু’বছর হল পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চালু হয়েছে। কিন্তু এখনও ল্যান্ড ফোনের সংযোগ না হওয়ায় আমরা হতাশ। এই নিয়ে সমস্যাও হচ্ছে। বিষয়টি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।’’
পাঁশকুড়া ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মণিকুন্তলা হাজরা বলেন, ‘‘বিষয়টি নজরে এসেছে। হাসপাতাল চত্বরে বিএসএনএল-এর ল্যান্ড লাইন সংযোগ নেই। দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।’’