বাদ সেধেছে প্রকৃতি। প্রবল বৃষ্টি ও ধসের জেরে সাময়িকভাবে অমরনাথ যাত্রা বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। আটকে পড়েছেন অনেক তীর্থযাত্রী। অমরনাথের পথে আটকে রয়েছেন মেদিনীপুর শহরের দশ জন তীর্থযাত্রীও।
পরিজনেরা আটকে থাকায় উদ্বিগ্ন তাঁদের বাড়ির লোকেরাও। তাঁরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। জেলা প্রশাসন রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। শহরের তীর্থযাত্রীদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েছে। সেই মতো রাজ্য প্রশাসন পদক্ষেপও করেছে। রাজ্য প্রশাসনের তরফে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মেদিনীপুরের ওই দশ জন তীর্থযাত্রীকে নিরাপদ জায়গায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে বলেই প্রশাসনের এক সূত্রে খবর। সকলেই আপাতত সুস্থ রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মেদিনীপুর শহর থেকে ১৩ জন অমরনাথ যাত্রায় গিয়েছিলেন। এর মধ্যে তিনজন মাঝ রাস্তা থেকে আগেই ফিরে এসেছেন। জয়দেব বসু, সুদীপ সিংহ মহাপাত্র, শক্তিপদ মাইতি, সুজিত রাউত, সৌম্যদীপ ঘোষ, বিশ্বরূপ ভুঁইয়া, শ্যামল দত্ত, সুকুমার সামন্ত-সহ অমরনাথের উদ্দেশে রওনা দেন। তাঁরা মেদিনীপুর শহরের মিরবাজার, মল্লিকচক ও তার আশেপাশের এলাকার বাসিন্দা। যাত্রাপথে বিপত্তি ঘটে। পঞ্চতরণিতে আটকে পড়েন তাঁরা। অমরনাথে গিয়েছেন মেদিনীপুরের পঞ্চানন চক্রবর্তী। সেখান থেকে ফোনে তিনি পরিজনেদের জানিয়েছেন, আপাতত তাঁরা ঠিকই রয়েছেন। আটকে পড়েছিলেন। স্থানীয় প্রশাসন তাঁদের উদ্ধার করেছে।
গত ২৮ জুন অমরনাথ যাত্রা শুরুর পর থেকে সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত দশ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে। এর মধ্যে এ রাজ্যের দুর্গাপুরের এক বাসিন্দাও রয়েছেন। অমরনাথের পথে তিনি অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, বালতাল হয়ে অমরনাথের রাস্তায় ধসের সঙ্গে ভারী বৃষ্টির জেরে রাস্তা সাফাইয়ের কাজ ব্যাহত হয়েছে। আর পহেলগাম দিয়ে যাওয়ার রাস্তাটি বিপজ্জনক ভাবে পিছল হয়ে রয়েছে। সেই কারণে যাত্রা আপাতত স্থগিত। অমরনাথে আটকে পড়া তীর্থযাত্রীদের এক পরিজনের কথায়, “শুনেছি ওখানে রাতভর প্রবল ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। খাবারের সমস্যা। জলেরও সমস্যা। জলের বোতল চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। তাঁবুতে থাকতে হলেও অনেক টাকা দিতে হচ্ছে। মেদিনীপুরে না ফেরা পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে পারছি না।” জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, বিষয়টি জানতে পেরেই রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন জেলাশাসক। মেদিনীপুরের তীর্থযাত্রীদের নাম-ঠিকানা জানান। এরপরই পদক্ষেপ করে রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতর। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী বলেন, “অমরনাথের পথে মেদিনীপুরের কয়েকজন তীর্থযাত্রী আটকে পড়েছিলেন। পরিজনেরা বিষয়টি জানিয়েছিলেন। জানার পরে জেলা থেকে পদক্ষেপ করা হয়েছে।”