ক্লাসঘরের ভেঙে পড়ে আছে ছাদের কড়িবরগা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
ভেঙে পড়ল ছাদের বিম। খসে পড়ল সিমেন্টের চাঙড়। বিদ্যালয়ের ভিতরে তখন চলছিল ভোটার তালিকা ও ভোটার কার্ড সংশোধনের কাজ। কোনওরকমে রক্ষা পেলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে আসা গ্রামবাসীরা।
রবিবার কাঁথি ৩ নম্বর ব্লকের যশাবিষা গিরিশচন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন গ্রামের লোকজন। অভিযোগ, বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও স্কুলের তরফে মেরামতির কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। ছেলেমেয়েদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সোমবার থেকে তাদের স্কুলে পাঠাতে নারাজ অভিভাবকদের অধিকাংশই।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার হলেও বিদ্যালয়ে ভোটার তালিকার কাজে এসেছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুনির্মল জানা। বিদ্যালয়ে বসে শুরু করেছিলেন কাজ। দুপুর ১২টা নাগাদ হঠাৎই ভেঙে পড়ে ছাদের কাঠের বিম। বিম ভেঙে যাওয়ার পর দেওয়ালের বেশ কিছু অংশ থকে চাঙড় খসে পড়ে। ফাটল দেখা দেয় দরজার উপরে ও বিভিন্ন জায়গায়। কোনওরকমে বিদ্যালয় ছেড়ে সকলে ছুটে বাইরে বেরিয়ে আসেন। সুনির্মলবাবু বলেন, “কোনওরকমে প্রাণে বেঁচেছি। এই নিয়ে তিন বার চাঙড় ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটল।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘জেলা পরিপরিষদ, ডিআই, এসআই, বিডিও-সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিদ্যালয়ের এমন বিপজ্জনক অবস্থার ছবি তুলে পাঠানো হয়েছিল। সেই সঙ্গে আবেদন করা হয়েছিল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু কিছুই হয়নি।’’
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৫৭ সালে এই বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছিল। ১৯৭৯ সালে একবার সংস্কার হয়েছিল। তার পর আর মেরামতি হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা সোমনাথ দাসের অভিযোগ, “বৌমার ভোটার কার্ড সংশোধন করতে এসেছিলাম। ঘরে মধ্যে ছাদের বিম ভেঙে পড়ল। কোনওরকমে বেঁচেছি। এই অবস্থায় নাতনিকে স্কুলে পাঠাব কোনও ভরসায়?’’ গ্রামবাসীদের অনেকের দাবি, আপাতত স্কুল বন্ধ থাক। ভবন মেরামতির পর ফের তা চালু করা হোক। প্রধান শিক্ষক তারাপদ মাইতি বলেন , “এ দিনের ঘটনা কাঁথি উত্তর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানিয়েছি। পাশের জুনিয়ার হাইস্কুলে ক্লাস করা যায় কি না, সেই প্রস্তাবও দিয়েছি। তিনি সোমবার বিদ্যালয়ে আসার আশ্বাস দিয়েছেন। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’’