বিক্ষোভ পড়ুয়াদের। —নিজস্ব চিত্র।
ক্লাসের মধ্যেই দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেছেন অঙ্কের শিক্ষক— এই অভিযোগ ঘিরে বুধবার আলোড়ন পড়েছিল দাঁতনের পোরলদায়। অন্নপূর্ণা বাণীমন্দির হাইস্কুলের সেই অভিযুক্ত শিক্ষক বৃন্দাবন সাউকে পরে গ্রেফতার করে বেলদা থানার পুলিশ। বুধবার রাতে ওই ছাত্রীর বাবা শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করার পরই বছর পঞ্চাশের বৃন্দাবনবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। মামলা হয় ‘প্রোটেকশন অফ চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস’ (পকসো) আইনে। খড়্গপুরের এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডল বলেন, “বুধবার রাতে অভিযোগ পাওয়ার পরেই আমরা ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছি।” তবে এ দিন জামিন পেয়ে গিয়েছেন ওই শিক্ষক।
মাস ছ’য়েক আগে ওই স্কুলে যোগ দিয়েছেন বৃন্দাবনবাবু। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর সসম্মান মুক্তির দাবিতে স্কুলের একাংশ পড়ুয়া ও অভিভাবক অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন। ক্লাস বয়কট করা হয়। স্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া দীপ দাসের কথায়, “আমরা ক্লাসে ছিলাম। বৃন্দাবন স্যার ওই ছাত্রীর সঙ্গে কোনও অভব্যতা করেননি।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রতাপনারায়ণ পড়িয়াও বলেন, “অন্য পড়ুয়াদের থেকে শুনেছি, ওই দিন বাইরে ঘোরাঘুরি করছিল ওই ছাত্রী। তাই বৃন্দাবনবাবু ওকে বকেছিলেন। পরে ক্লাস চলাকালীন কাছে ডেকে বোঝাচ্ছিলেন।”
তাহলে এমন অভিযোগ কেন? এক অভিভাবক মাখন মান্নার বক্তব্য, “স্কুলের বাইরে ওই ছাত্রীর কাকার মদের দোকান চলত। আমরা ও স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রতিবাদে তা উঠে যায়। সেই রাগেই স্কুলের বদনাম করতে এই মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে বলে আমাদের অনুমান।” যদিও ওই ছাত্রীর বাবার দাবি, ‘‘ওই দোকানে কোনও দিনই মদ বিক্রি হত না। ওটা ছিল পান গুমটি।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে সবই বলেছে। শ্লীলতাহানির কথা মিথ্যা নয়।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার দুপুরে। টিফিনের পরে ষষ্ঠ পিরিয়ডে অঙ্কের ক্লাস নিচ্ছিলেন বৃন্দাবনবাবু। ভরা ক্লাসে অন্য পড়ুয়াদের সামনেই ওই ছাত্রীর গায়ে তিনি হাত দেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে প্রধান শিক্ষককে ফোন করে সব জানান ছাত্রীর বাবা। বুধবার সন্ধ্যায় থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। এলাকায় শোরগোল পড়ে। খড়্গপুর থেকে বেলদায় যান এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডল। থানায় ডেকে পাঠানো হয় অভিযুক্ত শিক্ষককেও। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।