আবর্জনায় ঢেকেছে নিকাশি নালা। তমলুর পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মানিকপিরের থানের কাছে। নিজস্ব চিত্র
মশাবাহিত রোগ নিয়ে বর্ষা পরবর্তী সময়ে হামেশাই চিন্তুত থাকেন আমজনতা। জমা জল থেকে ডেঙ্গি ছড়ানোর সম্ভাবনা বাড়ে এই সময়। কয়েকদিন আগেই বুলবুলের দাপটে জেলা জুড়ে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর পাশাপাশি, বৃষ্টির জমা জল থেকে জ্বর-সহ জেলাবাসীর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তাই বুলবুল পরবর্তী সময়ে ডেঙ্গির প্রকোপ রুখতে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মশা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছ স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু এর পরেও মশা দমন অভিয়ানে তমলুক পুরসভার ভূমিকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জেলা সদর তমলুকে মশার উপদ্রবে বাসিন্দাদের নাজেহাল হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। পুরসভা সূত্রে খবর, গত অক্টোবরে পুর এলাকার ৩৬৫ জন বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত শহরে দু’জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে। ২০ ওয়ার্ড বিশিষ্ট তমলুক শহরের বিভিন্ন এলাকায় নিকাশির জন্য ‘হাই ড্রেন’ রয়েছে। এছাড়া, রাস্তার পাশে রয়েছে ছোট ছোট বহু নিকাশি নালা। ওই নালায় আবর্জনা ও জল জমে মশার উৎপত্তি বেড়েছে বলে অভিযোগ। দাবি, মশা মারা তেলও নিয়মিত ছড়ানো হয় না।
১০ নম্বর ওয়ার্ডের মানিকপীর থানের কাছে আবর্জনায় ভরা নালার পাশে থাকা একটি বাড়ির বাসিন্দা মন্দিরা ঘোড়াইয় বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন নালা পরিষ্কার করা হয়নি। প্রায় তিন মাস আগে মশা মারার তেল ছড়ানো হয়েছিল। বাড়িতে সব সময় মশার উপদ্রব।’’ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা লতা পাল বলেন, ‘‘সবসময় মশার উৎপাত। দিনের বেলাতেও বাড়ির জানালা, দরজা বন্ধ করে রাখতে হয়। পুরসভার অবহেলায় এমন হচ্ছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, মশাবাহিত রোগ-ডেঙ্গি দমনের জন্য পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর নিয়মিত নালা পরিষ্কার ও মশা মারা তেল ছড়ানোর দ্বায়িত্বে রয়েছে। বাসিন্দারা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে কি না, কোথাও জমা জল রয়েছে কি না, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তা সমীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য কর্মীদের ৫১টি দল রয়েছে। মশার উপদ্রবের কথা স্বীকার করে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মশার উপদ্রব রয়েছে ঠিকই। তবে তার মধ্যে ডেঙ্গির জীবাণু বাহক এডিস মশার সংখ্যা খুব কম। অসুস্থদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাধারণ জ্বর হচ্ছে। পুরসভার তরফে মশা দমনের কর্মসূচি চলছেই। মশা মারার তেল ছড়ানোর জন্য চারটি দলে আট জন কাজ করছেন।’’
আর তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেনের কথায়, ‘‘কিছু বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত হলেও শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ নেই। সব ওয়ার্ডেই নিয়মিত নালা, আগাছা পরিষ্কার ও মশা মারার তেল ছড়ানো হয়। মশা দমনের ক্ষেত্রে পুরসভার অবহেলার অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’