মহিষাদলে মঙ্গলবার শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে একাধিক প্রকল্পে জেলার রাস্তা তৈরি এবং রাস্তা সংস্কারে জোর দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু ভোট মেটার পরেও জেলার বহু রাস্তার হাল ফেরেনি বলে হামেশাই অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। পুজোর মুখে এই সব বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবিতে পথে নামলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার জেলার মহিষাদলে করলেন মিছিল। আর পরে এ দিনই একই বিষয়ে দুর্গাপুরে গিয়ে করলেন রাজ্য সরকারের সমালোচনা। বললেন, ‘‘নাকার নামে গত দু’দিন হল, রাস্তায় মানুষকে হ্যারাস করে টাকা নেওয়া হচ্ছে।’’
এদিন সকালে মহিষাদলের হরিখালি থেকে তেরোপেখ্যা পর্যন্ত দু’কিলোমিটার রাজ্য সড়ক সংস্কারের দাবিতে ওই পথেই মিছিলে হাঁটেন শুভেন্দু। তাঁর সঙ্গে পা মেলান তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি তথা হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল, স্থানীয় ইটামগরা- ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রামকৃষ্ণ দাস এবং অন্য বিজেপি নেতৃত্ব। মিছিল শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার খেলা, মেলা করছে। হেলিকপ্টার চড়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। অথচ রাজ্যের বেহাল রাস্তার দিকে নজর নেই। পুজোর সময় রাজ্যের অধিকাংশ রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে রয়েছে। মানুষ কীভাবে বাড়ি থেকে বেরাবেন, সেদিকে রাজ্য সরকারের কোনও নজর নেই।’’ দ্রুত হরিখালি থেকে তেরোপেখ্যা পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের দাবি করেন তিনি।
পরে দুর্গাপুরের কর্মসূচিতে গিয়ে আরও এককাঠি সুর চড়ান বিরোধী দলনেতা। দাবি করেন, রাজ্য সরকার রাজস্ব আদায়ের জন্য নাকার নামে গত দু’দিন হল, রাস্তায় মানুষকে হ্যারাস করে টাকা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু রাস্তা সারানো হচ্ছে না। এ বিষয়ে একটি টুইটও করেন বিরোধী দলনেতা। তাতে তিনি দাবি করেন, রাজ্য সরকার দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। কোষাগারে অর্থ ভরানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী নাকা তল্লাশি বাড়িয়ে আরও বেশি জরিমানা আদায়ে পুলিশকে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। টুইটেই শুভেন্দুর দাবি, আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটকে এভাবে অন্তত ২৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলার স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য বিরোধী দলনেতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মহিষাদলে খারাপ রাজ্য সড়ক প্রসঙ্গে সেখানের তৃণমূল বিধায়ক তিলক কুমার চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘সস্তায় জনপ্রিয়তা কুড়াতে এ সব বলে বেড়াচ্ছেন বিরোধী দলনেতা। সরকারি নিয়ম মেনে সময় মতো নিশ্চিত ভাবে রাস্তা সংস্কার কাজ হবে। ১০০ দিনের টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। গ্রাম উন্নয়ন দফতর কোনও টাকা দিচ্ছে না। ফলে গ্রামের উন্নয়ন হচ্ছে না। যে রাস্তায় উনি পদযাত্রা করেছেন, সেই রাস্তা উনি হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের সভাপতি থাকাকালীন করেছেন। ওই রাস্তা বেহাল দশার জন্য উনি নিজেই দায়ী। কারণ, উনি কাটমানি নিয়েছিলেন।’’