ফের ছেলেধরা সন্দেহে আটক, মার পুলিশকেও

আগেও জেলার নানা প্রান্তে ছেলেধরা সন্দেহে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ফের সবংয়ে একই ঘটনার জেরে উদ্বিগ্ন পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “প্রতিটি এলাকায় সচেতনতা বাড়াতে প্রচার করছি। তা সত্ত্বেও কিছু মানুষ বিশৃঙ্খলা ছড়াতে ছেলেধরা সন্দেহে সবংয়ে অবাঙালি যুবক-যুবতীকে আটকে রেখেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৭ ০৩:১৫
Share:

ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবক ও যুবতীকে পাকড়াও করে রেখেছিল গ্রামবাসীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশও। বুধবার সবংয়ের আদাসিমলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাতারকোলে গ্রামের ঘটনা। জনতার ছোড়া ইটের আঘাতে মাথা ফাটে এক পুলিশকর্মীর। পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। মারধর করা হয় গাড়ির চালককে। পরে পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

Advertisement

আগেও জেলার নানা প্রান্তে ছেলেধরা সন্দেহে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ফের সবংয়ে একই ঘটনার জেরে উদ্বিগ্ন পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “প্রতিটি এলাকায় সচেতনতা বাড়াতে প্রচার করছি। তা সত্ত্বেও কিছু মানুষ বিশৃঙ্খলা ছড়াতে ছেলেধরা সন্দেহে সবংয়ে অবাঙালি যুবক-যুবতীকে আটকে রেখেছিল। ওই দু’জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জনতার ইটের আঘাতে আমাদের দু’জন জখম হয়েছেন। এই ঘটনায় যুক্তদের শনাক্ত করেছি। এ বার তাদের গ্রেফতার করা হবে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি ভিন্‌ রাজ্যের নম্বর প্লেটের মোটরবাইকে এক যুবক-যুবতী এ দিন ছাতারকোল গ্রামে ঘুরছিলেন। এলাকার বাসিন্দারা দেখেন, কয়েকজন বালকের সঙ্গে ওই যুবক-যুবতী কথা বলছেন। এরপরেই গ্রামে নানা গুজব ছড়াতে থাকে। কেউ বলে, এর আগে তাঁরা সাতসাঁইতে গিয়েছিল। তার পরে তেমাথানি থেকে মোবাইল কিনেছেন। এরপরে ছাতারকোলে গ্রামে এসে ওই বালকদের নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামবাসীরা ওই দু’জনকে জোর করে স্থানীয় ছাতারকোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ঘরে আটকে রাখে।

Advertisement

ঘটনার খবর পেয়ে আসেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান দিগ্বিজয় মান্না। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তিনি পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে ওই যুবক-যুবতীকে উদ্ধার করতে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পঞ্চায়েতের উপ-প্রধানকে হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ। জনতা-পুলিশ ধস্তাধস্তি হয়। অভিযোগ, এলাকার বাসিন্দাদের ছোড়া ইটের আঘাতে জখম হন এক পুলিশকর্মী। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে গ্রামবাসীদের একাংশ। বাধা দিতে গেলে জখম হন গাড়ির চালক। এরপরে যুবক-যুবতীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ কর্মীরা।

পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান দিগ্বিজয়বাবু বলেন, “অবাঙালি যুবক-যুবতীকে ভিন্‌ রাজ্যের মোটরবাইকে ঘুরতে দেখে গুজব রটিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে আটকে রেখেছিল গ্রামবাসীরা। আমি ছাড়াতে গেলে আমাকেও হেনস্থা করা হয়।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘পুলিশকে মারধর করা হয়। স্থানীয়দের প্রশ্ন, ভিন্‌ রাজ্যের বাইকে যখন ছেলেধরারা গ্রামে ঢুকল তখন পুলিশ কেন দেখল না।” এরপরে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তবে এমন ঘটনায় এলাকা জুড়ে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement