হোসেনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা আপাতত গাছতলায় বসে পড়াশোনা করছে। —নিজস্ব চিত্র।
ক্লাস শুরু হওয়ার আগেই জরাজীর্ণ স্কুল ভবনের দেওয়াল থেকে চাঙড় ভেঙে পড়েছিল। আতঙ্কে স্কুলের বাইরে গাছতলায় বসে পড়াশোনা করছে ওই স্কুলের ৭৩ জন ছাত্র-ছাত্রী। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ৭৪ বছরের ওই স্কুলের মেরামতির জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করলেও তাতে কর্ণপাত করা হয়নি। এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের হোসেনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেওয়ালের চাঙড় ভেঙে পড়ে মঙ্গলবার। ক্লাস শুরু হওয়ার আগেই এই ঘটনা হওয়ায় বড়সড় বিপত্তি এড়ানো গিয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরবিন্দ দে বলেন, ‘‘স্কুল শুরু হওয়ার আগে বিল্ডিংয়ের দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। ভাগ্যক্রমে স্কুল চলাকালীন ঘটনাটি ঘটেনি। তাই প়ড়ুয়াদের মাথায় চাঙড় পড়েনি। তবে ১৯৪৯ সালে তৈরি স্কুলটি অনেকটা হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের মতো হয়ে রয়েছে। বাধ্য হয়েই ৭৩ জন ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়ে গাছতলাতেই ক্লাস করাতে হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এ বিষয়ে বার বার প্রশাসনে জানানো হয়েছে। তবে কোনও সুরাহা হয়নি।’’
স্কুলের চাঙড় ভাঙা নিয়ে তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করেছেন জেলার বিজেপি নেতার। বিজেপি মণ্ডল সভাপতি সমীরণ বাড়ুই বলেন, ‘‘তৃণমূল বিধায়কেরা দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত। তাই এই ভাঙাচোরা স্কুলে যাচ্ছেন না। কারণ তাঁদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হতে পারে। রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাই তো ভেঙে পড়েছে। বিল্ডিং ভেঙে পড়াটা আর নতুন কী! যে স্কুল পরিদর্শন করা দরকার, সেখানে যাবেন না তৃণমূলের বিধায়ক। কারণ তিনি বিক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন।’’
এই কটাক্ষকে নস্যাৎ করেছেন তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নমিতা সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি শুনেছি। স্কুলটিকে যাতে দ্রুত মেরামত করা যায়, সে ব্যবস্থা করছি। বিরোধীদের কাজই হল সমালোচনা করা। দিদির সুরক্ষা কবচ হচ্ছে একটি পাইলট প্রজেক্ট। প্রচারের আলোয় আসার জন্যই উন্নয়নের কথা না বলে সমালোচনা করছে বিরোধীরা।’’ সব মিলিয়ে স্কুল বিল্ডিং ভাঙা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তবে জেলা স্কুল পরিদর্শক প্রাণতোষ মাইতি বলেন, ‘‘স্কুল খোলার অনেক আগেই এ রকম ঘটনা হয়েছে। ওখানকার রুমে ক্লাস হয় না। খবর পেয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।’’