প্রতীকী ছবি।
সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গৃহশিক্ষকতা করার ক্ষেত্রে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ গৃহশিক্ষকতা করছেন বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এই নিয়ে ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ গৃহশিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক ও বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) দফতরে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে।
সংগঠনের তরফে জেলার বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে পদক্ষেপ করার দাবিও জানানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) জেলার সমস্ত জুনিয়র হাইস্কুল, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে নির্দেশিকা পাঠিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গৃহশিক্ষকতার নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আমিনুল আহসান বলেন, ‘‘সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মীদের জন্য সরকারি কিছু আচরণ বিধি রয়েছে। এর মধ্যে গৃহশিক্ষকতার বিষয়ও রয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসার প্রেক্ষিতে গৃহশিক্ষকতা নিয়ে সরকারি নিয়মগুলি মেনে চলার বিষয়ে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।’’
পশ্চিমবঙ্গ গৃহশিক্ষক সমিতির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক অমল পাত্রের অভিযোগ, ‘’সরকারি বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গৃহশিক্ষকতায় সরকারিভাবেই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু তা অমান্য করে কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা চুটিয়ে গৃহশিক্ষকতা করছেন। এঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের এই নির্দেশকা নিয়ে তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষকদের সংগঠন ওয়েস্টবেঙ্গল তৃণমূল সেকেন্ডারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি অনুপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে গৃহশিক্ষকতা না করেন তার জন্য সরকারি নির্দেশিকা রয়েছে। আমরা সংগঠনগত ভাবেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ওই নিয়ম মেনে চলার কথা বলি। তবে একটি সংগঠনের তরফে যে ভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নাম দিয়ে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তার সঙ্গে আমরা একমত নই। এ ভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অপমান করা হচ্ছে।’’ তাঁর মতে, ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর জন্য অভিভাবকদের পছন্দ ও চাহিদা রয়েছে। সেই অধিকার অভিভাবকদের আছে। এ ক্ষেত্রে ওই সব গৃহশিক্ষকদেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। সিপিএম প্রভাবিত নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক বিকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতার বিরুদ্ধে। তবে মাত্র ৫-১০ শতাংশ শিক্ষক হয়তো গৃহশিক্ষকতায় যুক্ত। তাই সব শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ওই তালিকাভুক্ত করা উচিত নয়। বিদ্যালয়গুলিতে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষক না থাকায় ছাত্রছাত্রীদের একটা বড় অংশ গৃহশিক্ষকের কাছে যান। তাই আমাদের দাবি, বিদ্যালয়গুলিতে শূন্যপদে দ্রুত শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা হোক।’’
গৃহশিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত তমলুক শহরের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম জানি। তবে অভিভাবকদের অনুরোধেই ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য করতে পড়াতে হয়। এ বিষয়ে একটি সংগঠনের তরফে যে অভিযোগগুলি করা হচ্ছে তা ঠিক নয়।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।