কাজ হারিয়েছেন বহু। প্রতীকী চিত্র।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে শুক্রবার চাকরি খুইয়েছেন সরকারি স্কুলের ৮৪২ জন গ্রুপ সি কর্মচারী। ওই তালিকায় রয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ১৪৩ জন। জেলা শিক্ষা দফতরের তরফে ওই সমস্ত কর্মচারীদের নোটিস পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। চাকরি হারানোদের প্রভাবশালী যোগ নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ব্লকের শ্যামসুন্দরপুর পাটনা কৃষ্ণচরণ বালিকা বিদ্যালয়ের দু’জন গ্রুপ সি কর্মচারী কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন। ওই দু’জনের একজন ওএমআর সিটে ৬০টির মধ্যে ১৪টি এবং অন্যজন ২১টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। পাঁশকুড়ার মাংলই রাধারানি গার্লস হাইস্কুলের চাকরি খোয়ানো গ্রুপ সি’র কর্মচারী ওএমআর সিটে মাত্র ৫টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। চাকরি হারানো গ্রুপ সি কর্মচারীদের ওএমআর সিট সামনে আসার পর অযোগ্যদের টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রির বিষয়টি আরও একবার সামনে এসেছে। সেই সঙ্গে জোরাল হয়ে উঠছে প্রভাবশালী তত্ত্বের কথাও।
বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে রাজনৈতিক বিতর্কসভায় শাসক দলের হয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সমীর চট্টোপাধ্যায়। সমীরের আদি বাড়ি পাঁশকুড়ার গোঁসাইবেড় গ্রামে। চাকরি হারানো গ্রুপ সি কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছেন সমীরের ছোট ভাই সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়ের নামও। তিনি মহিষাদলের ঘাসীপুর বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরে কর্মরত ছিলেন। এলাকায় গুঞ্জন ‘প্রভাবশালী’ দাদার দৌলতেই চাকরি পেয়েছিলেন সন্দীপ। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক দেবব্রত পট্টনায়েক বলেন, ‘‘সমীরবাবু টিভি চ্যানেলে বসে ওঁর দলের সততার কথা শোনান। আর উনি নিজেই অসৎ উপায়ে প্রভাব খাটিয়ে ভাইকে চাকরিতে ঢুকিয়েছিলেন। তৃণমূলের নেতারা শুধু নন, তাঁদের পার্ষদরাও পুরো শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির সাথে যুক্ত। এঁদের জন্যই মেধাবী চাকরিপ্রার্থীদের আজ রাস্তায় বসে থাকতে হচ্ছে।’’
এ বিষয়ে অধ্যাপক সমীর চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘আমার ভাই নিয়ম মেনেই চাকরি পেয়েছিল। কেন চাকরি চলে গেল বলতে পারব না। চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে আমার কোনও ভূমিকা ছিল না।’’
শনিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শিক্ষা দফতরের কাছে গ্রুপ সি’র চাকরি হারানোদের নামের তালিকা এসে পৌঁছেছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভাশিস মিত্র বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশে যে ৮৪২ জন গ্রুপ সি’র কর্মচারীর চাকরি বাতিল হয়েছে তাঁদের মধ্যে এই জেলায় রয়েছেন ১৪৩ জন। সেই তালিকা আমাদের কাছে এসেছে। সমস্ত নথিপত্র ভালভাবে খতিয়ে দেখে নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’