Khejuri

ভোটে নেই! মমতা ঘনিষ্ঠ পার্থর বার্তায় জল্পনা

প্রাক্তন বিধায়ক রণজিৎ তৃণমূলে ফের সক্রিয় হওয়ার কয়েকদিন পর পার্থপ্রতিমের এমন ফেসবুক পোস্ট ঘিরে দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত মিলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খেজুরি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৩ ০৬:৫০
Share:

সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট ঘিরে জল্পনা। প্রতীকী চিত্র।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বাজেট অধিবেশনে বৃহস্পতিবার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন। আর তারপর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ তথা খেজুরি বিধানসভায় তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর পার্থপ্রতিম দাসের ফেসবুকে করা মন্তব্য ঘিরে জল্পনা ছড়াল।

Advertisement

পার্থ জানিয়েছেন, তিনি আর কোনও ভোটে কোনও দলের হয়েই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। নিজের ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, ‘যেহেতু আমি এখন রাজনীতির নেতা নই, শুধু আমার বুথের একজন কর্মী মাত্র। আগামী দিনে কোনও ভোটে কোনও দলের হয়েই লড়ব না ঠিক করেছি। ফলে যাঁদের লাভ নেই, অনুরোধ করছি তাঁরা আনফ্রেন্ড হয়ে যান’।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে খেজুরি কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও হেরে যান পার্থপ্রতিম। তবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বরাবরের প্রিয়পাত্র, আস্থাভাজন পার্থর পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে নন্দীগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisement

মাস খানেক আগে রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে তৃণমূলে ফের সক্রিয় হয়েছেন খেজুরির প্রাক্তন বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল। শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলে থাকাকালীন রণজিৎ দাদার অনুগামী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ২০১১ সাল থেকে পরপর দুবার বিধানসভা ভোটে খেজুরি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পেশায় চিকিৎসক পার্থপ্রতিম দাসের তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনার কথা শোনা গিয়েছিল। তবে দু’বারই দলের টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হন রণজিৎ। পরে সরাসরি বিজেপিতে যোগ না দিলেও শুভেন্দু পদ্ম শিবিরে যুক্ত হওয়ার পর থেকে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছিল তাঁর। সে সময় সক্রিয় হয়ে ওঠেন পার্থ।তাঁকে গত বিধানসভা ভোটে প্রার্থীও করে তৃণমূল। যদিও তিনি হেরে যান। তবে ভোটে হারলেও তাঁকে খেজুরি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি এবং তৃণমূলের বিধানসভা কমিটির কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তৃণমূলের এসসি, এসটি এবং ওবিসি সংগঠনের রাজ্য সহ-সভাপতিও ছিলেন তিনি। যদিও এ দিন সেই পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রাক্তন বিধায়ক রণজিৎ তৃণমূলে ফের সক্রিয় হওয়ার কয়েকদিন পর পার্থপ্রতিমের এমন ফেসবুক পোস্ট ঘিরে দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ইঙ্গিত মিলেছে। এব্যাপারে পার্থ জানান, সাম্প্রতিককালে দলের হয়ে কাজ করেছেন। দলের মধ্যে কারা কী করেছে তার সমস্ত রিপোর্ট দলকে পাঠিয়েছেন। এখন দেখা যাচ্ছে যাঁদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন তাঁদেরকেই সঠিক বলে ধরা হচ্ছে। আর তাঁকে বেঠিক। সেক্ষেত্রে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তিনি আর কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে ভোটে লড়বেন না।

তবে পার্থপ্রতিমের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার দোলুই বলেন, ‘‘পার্থপ্রতিম ও রণজিতের মধ্যে গণ্ডগোল পুরনো। তাছাড়া যাঁরা বুঝতে পেরেছেন অনুব্রত মণ্ডলের মতো দুর্নীতি করার দায়ে ভিন্ রাজ্যের জেলে কাটাতে হতে পারে তাঁরা আগেভাগেই আর তৃণমূলের হয়ে ভোটের রাজনীতিতে সক্রিয় হতে রাজি হচ্ছেন না।’’

তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তরুণ কুমার মাইতি বলেন, ‘‘বিষয়টি নজরে এসেছে। এ ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে তাঁর সঙ্গে কথা বলা হবে।কারণ দল চায় সবাইকে নিয়ে চলতে। সে ক্ষেত্রে ওঁর সঙ্গে কোথাও যদি মতবিরোধ হয়ে থাকে তা মিটিয়ে নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement