প্রতীকী ছবি।
বাড়িতে প্রায়ই বসত মদের আসর। মদ খেয়ে বন্ধুদের নিয়ে চলত হুল্লোড়। অভিযোগ, বন্ধুরা চলে গেলে শুরু হতো স্ত্রী-ছেলের উপর অত্যাচার।
বাবার এই রুটিনে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল ১৭ বছরের ছেলে। মা মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় মুখ বুজে সব সহ্য করত সে। কিন্তু কিছুদিন আগে বাবা দ্বিতীয়বার বিয়ে করার ইচ্ছা প্রকাশের পর থেকেই তাঁর উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাত্রা নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয় ছেলে। এ নিয়ে অশান্তিও বেধেছিল বাবার সঙ্গে। যার জেরে ছেলেকে পথ থেকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে।
এগরা-১ ব্লকের জুমকি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিহারিপুর গ্রামে মঙ্গলবার ছেলেকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, যিশু মাইতি (১৭)র মৃতদেহ মঙ্গলবার এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ফেলেই পালিয়ে যায় বাবা। বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এগরার এসডিপিও সব্যসাচী সেনগুপ্ত জানান, ওই ঘটনায় বুধবার রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে হাসপাতাল সূত্রে জেনেছি, মৃত অবস্থায় দেহ আনা হয়েছিল। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলে সব স্পষ্ট হবে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, যিশুর বাবা গৌতম মাইতি দিনমজুরির কাজ করেতন। মাস ছয়েক ধরে স্নায়ুরোগে ভুগছেন মা। কথা বলতে পারেন না। অন্যান্য দিনের মতো মঙ্গলবারও গৌতম বন্ধুদের বাড়িতে এনে মদের আসর বাসন। তা নিয়ে প্রতিবাদ করলে অসুস্থ স্ত্রী ও ছেলেকে তিনি মারধর করেন বলে অভিযোগ। প্রতিবেশী ধীমান দে বলেন, “মদের আসরের পর প্রতিদিনই মারপিটের ঘটনা ঘটত। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করত যিশু। বাবার ফের বিয়ের ইচ্ছারও প্রতিবাদ জানিয়েছিল সে।’’ বুধবার খবর পেয়ে কলকাতার সোনারপুরন থেকে হাসপাতালে এসেছিলেন যিশুর মামা ও দিদা। মামা রতন গিরি ও দিদা সুভদ্রা গিরির দাবি, ‘‘বাবার বিয়ের ইচ্ছা ও রোজ মদ খাওয়া নিয়ে প্রতিবাদ করাতেই যিশুকে মারধর করে তার বাবা।’’ অভিযোগ, মৃত্যু নিশ্চিত করতে যিশুকে কড়িকাঠে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পরে প্রতিবেশীদের চোখকে ফাঁকি দিতেই ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করে পালিয়ে যায় সে।