পদ বণ্টন নিয়ে ক্ষোভের জেরে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসেছিল ময়না ব্লকে। দলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে ময়না দক্ষিণ মণ্ডল সহ-সভাপতির পদ ছাড়তে চেয়ে বিজেপির জেলা সভাপতিকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন ময়নার বাকচা এলাকার নেতা উত্তম সিংহ। জেলা নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে আলোচনার মাধ্যমে ওই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছিল। এবার বিজেপির মণ্ডল সভাপতি ও সহ-সভাপতির অনুগামীদের মধ্যে বিরোধ মেটাতে দলের জেলা সভাপতির ডাকা বৈঠকেই গোলমাল বাধল বিজেপি কার্যালয়ে।
মঙ্গলবার তমলুক শহরে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে ওই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। দলীয় সূত্রের খবর, তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী-৩ মণ্ডল বিজেপির সভাপতি সুজিত সামন্তের অনুগামী মণ্ডল কমিটির সদস্য ও মণ্ডল সহ-সভাপতি তথা ধলহরা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য অনুপ দোলাইয়ের অনুগামী মণ্ডল কমিটির সদস্যদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য দলের অঞ্চল নির্বাচন কমিটি গড়া নিয়ে সেই বিরোধ আরও বেড়েছে। ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ওই মণ্ডল এলাকায় দলের সাংগঠনিক কর্মসূচি পালনেও সমস্যা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। এমন পরিস্থিতিতে ওই মণ্ডল এলাকার যুযুধান গোষ্ঠীর নেতা -সহ ব্লক নেতৃত্বদের নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় তমলুকে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন। বৈঠকে তপন বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও বিজেপি’র রাজ্য সম্পাদক নবারুণ নায়েক ও শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক নারায়ণ মাইতি, জেলা সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক জিমুতকান্তি মাইতি ও মণ্ডল কমিটির সদস্য সহ ব্লক নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ, বৈঠকের সময়েই মণ্ডল সভাপতি ও সহ-সভাপতির অনুগামী নেতাদের মধ্যে গোলমাল বেধে যায়। এমনকী বৈঠকে মণ্ডল সহ-সভাপতি অনুপ দোলই, দলের মাতঙ্গিনী-৩ মণ্ডলের আইটি সেলের ইনচার্জ জয়দেব হালদার জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যেও বিরূপ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। এনিয়ে জেলা কার্যালয়ে ধুন্ধুমার বেধে যায় বলে অভিযোগ। বৈঠকে উপস্থিত জেলা ও ব্লক নেতৃত্বদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপরে দলের কয়েক জন নেতার হস্তক্ষেপে জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন অনুপ, জয়দেব। মণ্ডল নেতাদের নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ ভুলে একযোগে কাজ করার নির্দেশ দেন জেলা নেতৃত্বরা।
খোদ দলের জেলা কার্যালয়ে বৈঠক চলাকালীন দলের মণ্ডল এলাকার যুযুধান দুই গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে এমন গোলমালের ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন বিজেপি জেলা নেতৃত্ব। যদিও দলের বৈঠকে গোলমালের ঘটনা নিয়ে জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘ওই মণ্ডলের নেতৃত্বদের নিয়ে সাংগঠনিক বিষয়ে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কোনও গোলমাল হয়নি। আলোচনার মাধ্যমে সবকিছু মিটে গিয়েছে।’’