তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে বাধল পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইল ব্লকের নেপুরা গ্রামে। বন্ধ দোকান খোলাকে কেন্দ্র করে গোলমালের সূত্রপাত হলেও ঘটনার আড়ালে রয়েছে এলাকার একাধিক বালি খাদানকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর ক্ষমতা দখলের লড়াই। রগড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই এলাকায় সুবর্ণরেখার তীরে দীর্ঘদিন ধরে দু’টি অবৈধ বালি খাদান চলছে। সম্প্রতি আরও একটি খাদান হয়েছে। অভিযোগ, ব্লক তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর একাংশ পুরনো দু’টি খাদান নিয়ন্ত্রণ করেন। নতুন খাদানটি নিয়ন্ত্রণ করেন অঞ্চল তৃণমূলের একাংশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের সময় স্থানীয় এক সিপিএম কর্মীর সেলুন দোকান বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের একাংশের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার তৃণমূলের সাঁকরাইল ব্লক সভাপতি সোমনাথ মহাপাত্র-র ‘অনুমতি’ নিয়ে দোকান খোলেন ওই সিপিএম কর্মী। এরপরই তৃণমূলের রগড়া অঞ্চল সভাপতি রঞ্জিত মাইতির অনুগামীরা দোকানটি ফের বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ। শনিবার সকালে ব্লক সভাপতি সোমনাথবাবুর অনুগামীরা নতুন বালি খাদানটির রাস্তা আটকে দেন। ওই খাদানের বালিবাহী ট্যাক্টরগুলি আটকে দেওয়া হয়। এরপরই তৃণমূলের যুযুধান দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। ঘটনায় তিন মহিলা সহ সাতজন জখম হন। গুরুতর আহত দুই মহিলা-সহ তিনজনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। বাকিদের স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ অবশ্য কাউকে গ্রেফতার করেনি।
তৃণমূলের সাঁকরাইল ব্লক সভাপতি সোমনাথ মহাপাত্র বলেন, “এলাকায় অবৈধ বালি খাদান থেকে প্রতিদিন অজস্র বালিবাহী ট্র্যাক্টর চলাচলের ফলে বাসিন্দাদের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। তাই এ দিন গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিলেন। খাদান মালিকদের লোকজন গ্রামবাসীদের মারধর করেছেন।” তৃণমূলের রগড়া অঞ্চল সভাপতি রঞ্জিত মাইতি বলেন, “খাদান কীভাবে চলছে সেটা ব্লক সভাপতিকে জিজ্ঞাসা করুন। শুনেছি খাদানের মালিকানা নিয়ে গোলমাল চলছে। তার জেরেই এই ঘটনা।”
ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক নকুলচন্দ্র মাহাতো বলেন, “বালি খাদানকে কেন্দ্র করে গোলমাল হয়েছে। বিষয়টি পুলিশকে দেখতে বলেছি। ভূমি দফতরের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি।’’