—প্রতীকী চিত্র।
সরকারি জায়গা থেকে দখলদার সরানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিকভাবে পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মতো চলছে নির্মাণ সরানোর অভিযান। এমন আবহে রাস্তার পাশে সরকারি জায়গায় কালভার্টের উপরে দোকান ঘরে পাকা ছাদ তৈরিতে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাজার কমিটি ও গ্রাম কমিটির সদস্যদের মধ্যে গোলমাল বাঁধল নোনাকুড়ি বাজারে। বৃহস্পতিবার ওই ঘটনায় বাজার কমিটির সম্পাদক-সহ তিনজন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। এলাকায় ব্যপক উত্তেজনা ছড়ায়। তমলুক থানার পুলিশবাহিনীকে ঘটনাস্থলে যেতে হয়।
হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের পাশে নোনাকুড়ি বাজারে ব্লকের গ্রামীণ হাসপাতালে কাছেই গুরুত্বপূর্ণ নিকাশি খাল রয়েছে। নোনাকুড়ি গ্রামের জল নিকাশির জন্য খালের সঙ্গে সংযোগকারী কালভার্টও রয়েছে। ওই কালভার্টের উপরেই একটি টালির চাল দেওয়া ঘরে খাবার হোটেল চালাতেন একজন ব্যবসায়ী। অভিযোগ, ওই হোটেল ব্যবসায়ী সম্প্রতি অন্য একজনকে ঘরটি ভাড়ায় দেন। সেই ব্যক্তি ভাড়া দোকানে পাকা ছাদ করতে চেয়ে বাজার কমিটির কাছে আবেদন জানান। বাজার কমিটির তরফে জানানো হয় কালভার্টের উপর ওই ঘরে পাকা ছাদ করা যাবে না। এর পরেও ওই ব্যক্তি কয়েকদিন আগে থেকে পাকা ছাদ তৈরির জন্য প্রস্তুতি নেন। তাতে বাজার কমিটির সদস্যরা ফের আপত্তি করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বুধবার গভীররাতে ওই দোকানে পাকা ছাদের ঢালাই দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বাজার কমিটির সম্পাদক এবং সদস্যরা সেখানে যান। বাজার কমিটির লোকজন পাকা ছাদ ভেঙে ফেলতে গেলে নোনাকুড়ি গ্রাম কমিটির কর্তারা এসে বাধা দেন। দুই পক্ষের মধ্যে গোলমাল বাঁধে বলে অভিযোগ। সে সময় বাজার কমিটির সম্পাদক নিতাই সামন্তকে গ্রাম কমিটির লোকজন ধাক্কাধাক্কি করে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। এরপর বাজার কমিটির লোকজনরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ওই ব্যবসায়ীর সমর্থনে আসা গ্রাম কমিটির দুই জনকে মারধর করেন বলে অভিযোগ।
নোনাকুড়ি বাজার কমিটির সম্পাদক নিতাই সামন্ত বলেন, ‘‘পাশের খাল দিয়ে বাজার এবং গ্রামের জল নিকাশি হয়। ওখানে পাকা ঘর করলে নিকাশির কাজে এবং ভবিষ্যতে কালভার্ট সংস্কার করতে অসুবিধা হতো। তাই আপত্তি করা হয়। তবে সেই আপত্তি অগ্রাহ্য করে বুধবার রাতে ছাদ পাকা করা হয়। বাজারের তরফে তা ভাঙতে গেলে ওই ব্যবসায়ীর সমর্থনে গ্রাম কমিটির লোকেরা এসে গোলমাল করেছে।’’ কালভার্টের উপরে বেআইনি দখল নিয়ে মন্তব্য না করলেও নোনাকুড়ি গ্রাম কমিটির সম্পাদক বসন্ত বর্মণ বলেন, ‘‘কালভার্টের উপরে ওই দোকান ঘরে পাকা ছাদ তৈরি নিয়ে বাজার কমিটি আপত্তি করেছিল। কিন্তু এর আগেও আশেপাশের কয়েক’টি দোকানে ছাদ তৈরি হয়েছিল। আর সরকারের জায়গায় দোকানের ছাদ বাজার কমিটি কেন ভাঙতে যাবে? বাজার কমিটির সম্পাদককে হেনস্থার অভিযোগ ঠিক নয়।’’
এ দিন দুপক্ষে’র সংঘর্ষে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে তমলুক থানার পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশের তরফে আপাতত দোকানঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।