রঙিন: ছাত্রছাত্রীদের হাতে তৈরি রকমারি রাখি। নিজস্ব চিত্র
দোকান থেকে কেনা রকমারি রাখি নয়। নিজেদের হাতে গড়া রাখিই এ বার সহপাঠীদের হাতে বাঁধবে লিপি বেরা, মধুমিতা দে-রা। এই উদ্যোগ খড়্গপুর-২ ব্লকের ভাণ্ডারিয়া কালিকা হাইস্কুলের। আগেই পড়ুয়াদের রাখি বানানো শেখানো হয়েছে। সেই মতো রাখি বানিয়েছে মধুমিতারা।
কেন এই উদ্যোগ? দোকান থেকে রাখি কিনলেই তো হত? স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিআশিস কারকের জবাব, “এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা সৃষ্টিশীল কাজে আরও উৎসাহ পাবে।’’ সহ-শিক্ষক কৌশিক চক্রবর্তী জানালেন, “লেখাপড়ার পাশাপাশি স্কুলে হাতের কাজও শেখানো হয়। দিন কয়েক আগে রাখি তৈরি শেখানো হয়েছিল। তারপরই ছাত্রছাত্রীরা রাখি বানিয়েছে। সকলে খুব সুন্দর সুন্দর রাখি বানিয়েছে বলেও জানিয়েছেন কৌশিকবাবু।
টুকরো টুকরো করে কাটা নানা রঙের কাগজ, পুঁতি, জড়ি। কাঁচি দিয়ে কাগজ কেটে, আঠা দিয়ে জুড়ে তৈরি করা হয়েছে একের পর এক রাখি। নিজে হাতে রাখি বানিয়ে খুশি পড়ুয়ারাও। দশম শ্রেণির ছাত্রী মধুমিতা, সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী লিপির কথায়, “শিক্ষকেরা ল্যাপটপে বিভিন্ন ছবি দেখিয়ে রাখি বানানো হাতেকলমে শিখিয়েছেন। সেই মতো রাখি তৈরি করতে পেরে দারুণ লাগছে।’’ অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সৌমিলি বেরা, দশম শ্রেণির সঙ্গীতা বেরা, সপ্তম শ্রেণির ছাত্র অঞ্জন সিংহ, দশম শ্রেণির ছাত্র লক্ষ্মণ কিস্কুদেরও মত, স্কুলের এই উদ্যোগ খুব ভাল।
দোকানে রকমারি রাখির অভাব নেই। দিন দিন রাখির জৌলুস, নকশায় বৈচিত্র বাড়ছে। আর অনলাইনে তো রাখির হাজারও সম্ভার। মেদিনীপুর-খড়্গপুরের মতো শহরেও গত কয়েক বছর ধরে অনলাইনে রাখি এবং উপহার কেনার চল বেড়েছে। তবে এ সবের মাঝেও নিজেদের রাখি বানানো একেবারে অন্য স্বাদের ব্যাপার, মানছে সৌমিলি, অঞ্জনরা। এ বার রাখিবন্ধন ঘিরে খড়্গপুরের এই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তাই আলাদা উৎসাহ-উদ্দীপনা। স্কুলের এক সহ-শিক্ষক আবার বলছিলেন, “এখন তো স্বনির্ভরতার উপরে সকলে জোর দিচ্ছেন। এটাকে স্বনির্ভরতার সূচনা বলা যেতে পারে।’’