—প্রতীকী চিত্র।
পূর্ব মেদিনীপুরে দিঘা-রামনগর এলাকায় এক তৃণমূল নেতার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য এলাকায়। মঙ্গলবার রামনগর থানার হলদিয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ কইনাড়া গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূল নেতা চন্দন সামন্তের (৬১) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁরই বাড়ি থেকে। খবর পেয়ে তাঁর দেহ উদ্ধার করতে যায় পুলিশ। সেই সময় দেহের পাশ থেকে এক টুকরো কাগজ উদ্ধার হয়েছে। যা সুইসাইড নোট বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। কাগজে লেখা, ‘‘আমি চন্দন সামন্ত। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী নির্মল সামন্ত (অপু)। পিতা— প্রভাত সামন্ত।’’ মৃতের পরিবারের দাবি, সুইসাইড নোটে লেখা নির্মল আদতে বিজেপি নেতা। তাঁকেই মৃত্যুর জন্য দায়ী করে গিয়েছেন চন্দন। এর পর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত চন্দন দু’বার তৃণমূলের টিকিটে পঞ্চায়েত সদস্য হন। এই পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট না পেলেও দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে তাঁকে প্রচারে দেখা গিয়েছে। এর মাঝে মঙ্গলবার বেলার দিকে চন্দনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের দাবি, স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রায়শই মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া এবং মারধরের হুমকি দিতেন চন্দনকে। তাই মানসিক অবসাদেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন চন্দন। রাজ্যের কারা দফতরের মন্ত্রী তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির দাবি, ‘‘আমাদের দলের সক্রিয় সদস্য চন্দনের মৃত্যুর পিছনে লাগাতার রাজনৈতিক চাপই কারণ। তিনি সুইসাইড নোটেও লিখেছেন, তাঁর পাশের বাড়ির বিজেপি নেতার নাম। যিনি বিভিন্ন ভাবে ওঁকে ভয় দেখাতেন। সেই চাপ সামলাতে না পেরেই তৃণমূল নেতা আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ তদন্ত করে অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করুন। যাতে আগামী দিনে এই ধরনের কোনও পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়।’’
তৃণমূল নেতার মৃত্যুর পর যে চিরকুট ঘিরে শোরগোল শুরু হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
যদিও এই সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, ‘‘একটি আত্মহত্যার ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। রামনগরে মৃত ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ থাকার কারণে আত্মহত্যা করেছেন বলে শুনেছি। আর সেই মৃত্যু নিয়েই রাজনীতি করা হচ্ছে!’’ পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, চিরকুটে বিজেপি কার্যকর্তার নাম লিখে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে শাসকদল। মৃত ব্যক্তি ওই চিরকুট লিখে গিয়েছিলেন না কি অন্য কেউ তাঁর মৃত্যুর পর লিখেছেন, তা আদালতে প্রমাণ হবে। এই ভাবে বিজেপিকে আটকানো যাবে না।’’