হিমঘরে বস্তাবন্দি গোলাপ। নিজস্ব চিত্র
একদিন পরেই ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’। ভালবাসার মানুষটির হাতে তুলে দিতে হবে প্রেমের প্রতীক লাল গোলাপ। ফলে বাজারে এখন গোলাপের চাহিদা তুঙ্গে। সেই চাহিদার কথা ভেবে প্রেমিক-প্রেমিকার হাতে গোলাপ পৌঁছে দিতে উদ্যোগী গোলাপ চাষি-ব্যবসায়ীরাও। কাছের মানুষটির হাতে তুলে দেওয়ার আগে যাতে গোলাপের পাপড়ি ম্রিয়মাণ হয়ে না পড়ে সে জন্যই হিমঘরে লাখ লাখ গোলাপ মজুত করে রেখেছেন ফুলচাষিরা।
গত কয়েক বছর ধরে বাতানুকূল যন্ত্র বিকল থাকার পরে পাঁশকুড়ার মেচোগ্রামের সরকারি হিমঘরে সম্প্রতি বসেছে নতুন বাতানুকূল যন্ত্র। সেখানেই ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’র জন্য গোলাপের কুঁড়ি মজুত করছেন পাঁশকুড়া এবং কোলাঘাটের ফুল ব্যবসায়ীরা। প্রায় পাঁচ লক্ষ কুঁড়ি মজুত করা হয়েছে। যা বের করা হবে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’র আগে। পাঁশকুড়া এবং কোলাঘাটে গাঁদা, দোপাটি, চন্দ্রমল্লিকার পাশাপাশি গোলাপ চাষেরও খ্যাতি রয়েছে। কাঁসাই নদীর তীরে মাইশোরা, বাকুলদা, জানাবাড়, রায়তর প্রভৃতি গ্রামের চাষ করা গোলাপ কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই-সহ ভারতের সমস্ত বড় শহরেই পাঠানো হয়। ওই সব এলাকার অন্তত ২০০ জনের বেশি গোলাপ ব্যবসায়ী ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ উপলক্ষে ভাল ব্যবসার আশা করছেন।
বৃহস্পতিবারই হিমঘরে প্রায় ১৫ হাজার গোলাপের কুঁড়ি রেখেছিলেন ফুল ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ নস্কর। পাঁশকুড়ার দক্ষিণ চাঁচিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বনাথবাবু গত ১২ বছর ধরে গোলাপ ব্যবসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সারা বছরই প্রতিদিন গড়ে এক থেকে দেড় হাজার গোলাপ কিনে কোলাঘাটের ফুলবাজারে বিক্রি করি। কিন্তু ভ্যালেন্টাইনস ডে’র দু’দিন আগেই গোলাপের চাহিদা বাড়ে। ওই সময় প্রতিদিন প্রায় ২০-২৫ হাজার গোলাপ কুঁড়ি হিমঘর থেকে বের করে বিক্রি করি।’’ রণজিৎ সাঁতরা, মধুসূদন বেরার মতো ব্যবসায়ীরাও জানান, ভ্যালেন্টাইনস ডে’তে গোলাপের প্রচুর চাহিদা থাকে। তাই গোলাপ চাষের পরিমাণও অনেক বেড়েছে। তাই হিমঘরে গোলাপ কুঁড়ি জমিয়ে রাখা হয়েছে।
পাঁশকুড়া ফুলবাজার পরিচালন সমিতির সদস্য নারায়ণ নায়েক বলেন, ‘‘গত তিন বছর হিমঘর অচল থাকায় দুর্গাপুজোর সময় পদ্ম চাষি-ব্যবসায়ীরা অসুবিধায় প়ড়েছিলেন। এ বার ভ্যালেন্টাইনস ডে’র আগে ওই হিমঘর চালু করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। হিমঘর চালু হওয়ায় খুব কম খরচে গোলাপ সংরক্ষণ করা যাচ্ছে। এতে গোলাপ ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি চাষিরা উপকৃত হবেন।’’