প্রতীকী ছবি।
পরিবহণ মন্ত্রী থাকার সময় সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড উদ্বোধন ও নতুন দুটি সরকারি বাস চালুর আশ্বাস দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। দল বদলে এখন তিনি বিজেপি শিবিরে। এখনও নতুন কোনও পরিবহণ মন্ত্রী পায়নি রাজ্য। এই অবস্থায় বাসস্ট্যান্ডের উদ্বোধন দূরঅস্ত, নতুন সরকারি বাস পাওয়া নিয়েও ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে স্বাভাভিক ভাবেই হতাশ পটাশপুরের মানুষ।
পটাশপুরের বাসিন্দদের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে সেখানে আধুনিক পরিষেবা যুক্ত সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড তৈরির পরিকল্পনা হয়। প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর অনুমতিতে প্রকল্পের জন্য পরিবহণ দফতর এক কোটি সাতাত্তর লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব মেদিনীপুরের যোগাযোগের সংযোগস্থল পটাশপুর বাঙ্গুচক মোড়ে এই সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড তৈরির কাজ শুরু হয়। কয়েক মাস আগে সেই কাজ শেষ হয়েছে। একদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর গামী পটাশপুর-বালিচক রাস্তা, অপরদিকে এগরা-বাজকুল সড়ক। বাঙ্গুচক মোড়ের ত্রিকোণ পার্ক হয়ে প্রতিদিন হাওড়া, ওড়িশা-সহ একাধিক দূরপাল্লার বাস চলাচল করে। শতাধিক লোকাল বাস ও ট্রেকার, লরি চলে। পশ্চিম মেদিনীপুর হয়ে অসংখ্য পণ্যবাহী গাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরে পটাশপুর হয়ে বাজকুল, কাঁথি, দিঘায় যাতায়াত করে। ফলে বাঙ্গুচক মোড় গণপরিবহণের করিডর হিসেবে গড়ে ওঠে। কিন্তু জায়গার অভাবে রাস্তার উপরেই সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকত বাস ও লরি। সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড তৈরি হওয়ার পর সেখানে একসঙ্গে কুড়িটি বাস ও লরি দাঁড়িয়ে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষারত যাত্রীদের জন্য সুলভ শৌচালয় ও বিশ্রামাগার তৈরি করা রয়েছে।
দুর্গাপুজোর আগে প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর হাতে সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড উদ্বোধনের কথা ছিল। এর সঙ্গে পটাশপুরের মানুষের সুবিধার্থে হাওড়াগামী নতুন দুটি সরকারি বাস চালুর আশ্বাস দিয়েছিল শুভেন্দু। এখনও সবই অনিশ্চিত। বাসস্ট্যান্ড তৈরি হয়ে পড়ে থাকলেও উদ্বোধন নিয়ে সাড়াশব্দ নেই প্রশাসনের।
পরিবহণ দফতর এখন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। কে উদ্বোধন করবে তা নিয়ে চলছে চাপানউতোর। জেলা প্রশাসন এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। সূত্রের খবর, সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে না। সরকারি ভাবে স্থানীয় পঞ্চায়েতকে বাসস্ট্যান্ডের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে। পঞ্চায়েত বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী পরিষেবা শুরু করবে। পটাশপুরের মানুষের সুবিধার্থে যে দুটি সরকারি বাস চালুর কথা ছিল তাও অনিশ্চয়তার মুখে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাসস্ট্যান্ড উদ্বোধন হওয়ার কথা থাকলেও সরকারি বাস চালু নিয়ে প্রশাসনের কাছে কোনও তথ্য নেই। ফলে হতাশ পটাশপুরের মানুষ। স্থানীয় ব্যবসায়ী পরিমল দাস বলেন, ‘‘সরকারি বাস চালু হলে ব্যবসার কাজে সহজে কলকাতা যাওয়া যেত। এখন বাস চালু নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় আমরা হতাশ।’’
জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মৃণালকান্তি দাস বলেন, ‘‘সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড নিজে উদ্বোধন করে সরকারি বাস পরিষেবা চালুর কথা দিয়েছিলেন প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী। আনুষ্ঠানিক ভাবে আর বাসস্ট্যান্ড উদ্বোধন হবে না। সরকারি বাস চালুর বিষয়ে এখনও তেমন কোনও
তথ্য নেই।’’