বর্জ্য: সুরার পুল এলাকার অবস্থা।
দু’দশক হতে চলল গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পুরসভায় উন্নীত হয়েছে পাঁশকুড়া। কিন্তু পুর পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ মিটছে না পুরবাসীর। কখনও নিকাশি নিয়ে ক্ষোভ তো কখনও জমা আবর্জনা সাফ না করার অভিযোগ। সম্প্রতি এ নিয়ে ফেসবুকে সরব হয়েছেন প্রাক্তন কাউন্সিলরও। প্রশ্ন তুলেছেন পুরসভার ভূমিকা নিয়ে।
প্রাক্তন ওই কাউন্সিলর কল্যাণ রায় জানাচ্ছেন, পাঁশকুড়া স্টেশনের অদূরে পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার দু’টি গেটের ডান দিকে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। সেগুলি পচে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আবর্জনা সাফ না করায় তা বাড়তে বাড়তে গিয়ে মিশছে পাঁশকুড়া স্টেশন রোডে। কার্যত বাধ্য হয়ে আবর্জনার উপরেই দাঁড়াতে হচ্ছে টোটো চালকদের। আর পচা দুর্গন্ধে যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে অপেক্ষারত যাত্রীদের উঠছে নাভিশ্বাস।
কল্যাণের অভিযোগ, পাঁশকুড়া পুরসভা বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ তো করেই না, এমনকী মূল রাস্তাগুলির ধারে জমে থাকা আবর্জনাও সময় মতো পরিষ্কার করা হয় না। ফলে দূষণ ছড়াচ্ছে শহরে। ফেসবুকে পুরসভার কয়েকটি জায়গায় আবর্জনা জমে থাকার ছবি পোস্ট করে কল্যাণ লিখেছেন, ‘এই পুরসভা কি নির্মল পুরসভা হওয়ার যোগ্য? নীচের ছবিগুলি দেখলে জনগণ বুঝতে পারবেন এই পুরসভার কী হাল’!
কেশাপাট থেকে প্রতিদিন বাসে করে পাঁশকুড়ায় যাতায়াত করেন কলেজ ছাত্র লক্ষ্মীকান্ত সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ডের সামনে প্রায়ই আবর্জনা জমে থাকে। পচা গন্ধে এখানে টেকা দায়।’’ স্থানীয় এক টোটো চালক বলেন, ‘‘বাসস্ট্যান্ডের সামনে টোটো নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়। আবর্জনা রাস্তার উপরে জমে রয়েছে। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আবর্জনাতেই টোটো নিয়ে দাঁড়াই। যাত্রীদেরও আবর্জনা পেরিয়ে টোটোয় উঠতে হয়।’’
এই বিষয়ে পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান নন্দকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘শহরের প্রধান রাস্তাগুলি থেকে নিয়মিত আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়। আসলে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে যাওয়ার রাস্তাটি কাজের জন্য বন্ধ থাকায় কয়েকটা দিন পরিষেবা ব্যহত হয়েছে। আমাদের হাতে পর্যাপ্ত সাফাইকর্মী নেই। তাই আমরা পরিকল্পনা করেছি স্ব-সহায়ক দলের মহিলাদের আবর্জনা সংগ্রহের কাজে লাগাব। আশা করছি এই মাসের শেষ থেকেই আমরা বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের কাজ শুরু করতে পারব।’’
মহিলাদের স্বনির্ভর করতে বিভিন্ন স্বসহায়ক গোষ্ঠী রয়েছে। কিন্তু তাঁদের দিয়ে আবর্জনা সাফাই! এ ব্যাপারে স্ব-সহায়ক গোষ্ঠীর জেলা নেত্রী শ্রাবন্তী ঘোড়াই বলেন, ‘‘সাফাইয়ের কাজ স্ব-সহায়ক দলের সদস্যদের নয়। হাতে কলমে কাজ করে স্থায়ী ভাবে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষে স্ব-সহায়ক দল গড়ে উঠেছে।’’