ঝড় দূরের কথা, জোরে বাতাস বইলেই চলে যায় আলো। আবার বৃষ্টি শুরু হলে তো কথাই নেই। বৃষ্টি থামার পরেও পর কয়েক ঘণ্টা কাটিয়ে তার পরে আসে বিদ্যুৎ সংযোগ। সারা বছর কমবেশি এমন সমস্যায় ভুগলেও বর্ষায় তা আরও বেড়ে যাওয়ায় নাজেহাল হতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এমনই অবস্থা পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোড, গড়বেতা, গোয়ালতোড় ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায়। সমস্যার কথা স্বীকার করে বিদ্যুৎ দফতরের চন্দ্রকোনা রোডের স্টেশন ম্যানেজার শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এ ধরনের সমস্যা দ্রুত মেটানোর চেষ্টা চলছে।”
কয়েকদিন ধরেই মেদিনীপুর সদর মহকুমার অধীন গড়বেতার তিনটি ব্লকের নয়াবসত, আমলাশুলি, ঘাঘরা, শিউলি, ডুকি, বড়পাড়া, কিয়ামাছা, ফতেসিংহপুর সবর্ত্রই বিদ্যুৎ বিভ্রাট চরমে। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। সন্ধ্যা নামলে আবার পুরো ভোল্টেজ থাকে না। লাগাতার লোডশেডিং এবং লো ভোল্টেজে নাজেহাল অবস্থা সাধারণ মানুষ থেকে ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ীদের। ডুকি গ্রামের এক ব্যবসায়ীর কথায়, “সন্ধ্যার পর দোকান বন্ধ করে দিতে হয়।আলো না থাকলে কী ব্যবসা করা যায়?”
নয়াবসতের এক বধূ অমিতা সরকারের কথায়, “একেই প্রচণ্ড গরম। বিদ্যুৎ থাকলেও ভোল্টেজ এত কম থাকে যে পাখাও চলে না।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন থেকে সংশ্লিষ্ট দফতরের বারবার জানানো হয়েছে।কিন্তু সমস্যা মেটার বদলে দিনদিন বিদ্যুৎ বিপর্যয় বেড়েই চলেছে।’’ বিদ্যুৎ বিভ্রাটে মাথায় হাত পড়েছে ছোট ব্যবসায়ী থেকে চাষিদের। বিদ্যুৎ বিপযর্য়ের ফলে স্যালো বন্ধ। এখন আমন ধানের মরসুম। বীজতলা তৈরি থেকে চারা রোপণের কাজ চলছে জোরকদমে। কিন্তু টানা লোডশেডিংয়ে চাষও লাটে ওঠার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
কেন এমন অবস্থা?
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরির পাশাপাশি একাধিক সজলধারা পাম্পও চলছে দফতরের অনুমতি না নিয়েই। এ ভাবে বিদ্যুৎ চুরির জন্যই সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “আইন ভেঙে অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ চুরির ফলেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। বহু মামলাও হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ চুরি রোখা যাচ্ছে না।” যদিও ওই কর্তার দাবি, চলতি মাসেই বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।