বিজয় মাহাতো। নিজস্ব চিত্র
ঝুমুর সম্রাট বিজয় মাহাতোর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে দিন দিন। হৃৎযন্ত্রের সমস্যায় এখন শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে শিল্পীর। তাঁর চিকিৎসায় পাশে দাঁড়িয়েছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ।
সংগঠনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে শিল্পীর সুচিকিৎসার আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিজয়ের শারীরিক বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। সেই মতো আজ, শুক্রবার ওই হাসপাতালে শিল্পার প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা হবে। তারপর চিকিৎসা পরিষেবা বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মাঝরাতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন ৬৪ বছরের বিজয়বাবু। ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট’-এ (সিসিইউ) দিন সাতেক ভর্তি থাকার পরে তাঁকে কলকাতায় ‘রেফার’ করা হয়। ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল সূত্রে খবর, বিজয়ের হৃদ্যন্ত্রের রক্তসংবহনকারী তিনটি ধমনীতে নব্বই শতাংশের বেশি ‘ব্লক’। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় অসুখটি হল ‘ট্রিপল ভেসেল ডিজিজ’। বিজয়বাবু শারীরিক ভাবে খুবই দুর্বল থাকায় তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নেননি পরিজনরা। এ দিকে ঝাড়গ্রামের বাড়িতে থেকে কার্যত বিনা চিকিৎসায় এই ক’দিন ছিলেন শিল্পী। তাঁর পরিজনেদের অভিযোগ, ঝাড়গ্রামের জনপ্রতিনিধিদের কাছে আবেদন জানিয়েও শিল্পীর চিকিৎসার ব্যাপারে কোনও সাহায্য মেলেনি। তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা আহ্বায়ক উজ্জ্বল দত্ত অবশ্য বলেন, ‘‘অভিযোগ সত্যি নয়। আমরা অসুস্থ শিল্পীর পাশে রয়েছি।’’
সংবাদপত্রে বিজয়ের অসুস্থতার খবর জেনে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর বাড়িতে যান আদিবাসী কুড়মি সমাজের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক রাজেশ মাহাতো। ৪ মার্চ রাজেশ মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে গিয়ে সব জানান। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়। এ বার আদিবাসী কুড়মি সমাজের উদ্যোগেই বিজয়বাবুকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাঁর পরিজনেদের কলকাতায় থাকার বন্দোবস্তও করেছে সংগঠনটি। রাজেশ বলেন, ‘‘বিজয়দা আমাদের গর্ব। উনি অসহায় অবস্থায় রয়েছেন জেনে আমরা শিল্পীর পাশে দাঁড়িয়েছি।’’