রাখি বানিয়েই খুশি, উৎসবে প্রতিবন্ধী পড়ুয়ারা

নিজেদেরই তৈরি করা রাখি একে অপরের হাতে বেঁধে উৎসবে মাতলো ওরা। ওরা ফরিদপুরের বিবেকানন্দ লোকশিক্ষা নিকেতনের দৃষ্টিহীন ও মানসিক প্রতিবন্ধী স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। শনিবার সকাল থেকেই রাখিবন্ধনকে ঘিরে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রবল উৎসাহ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৫ ০০:৩৩
Share:

কাঁথির ফরিদপুরে দৃষ্টিহীন ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের রাখি বন্ধন (বাঁ দিকে)। নিমতৌড়িতে প্রতিবন্ধীরা রাখি পরিয়ে দিলেন দিঘাগামী পর্যটকদের (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

নিজেদেরই তৈরি করা রাখি একে অপরের হাতে বেঁধে উৎসবে মাতলো ওরা। ওরা ফরিদপুরের বিবেকানন্দ লোকশিক্ষা নিকেতনের দৃষ্টিহীন ও মানসিক প্রতিবন্ধী স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। শনিবার সকাল থেকেই রাখিবন্ধনকে ঘিরে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রবল উৎসাহ। প্রতিবন্ধকতা সঙ্গী করেই পথ চলে ওরা। কিন্তু আনন্দের আবহে ভাটা নেই। স্কুলের হলঘরে ময়না, মধুমিতা, সৌমেন, পলাশ, শ্রীকৃষ্ণরা প্রার্থনা দিয়ে শুরু করে দিন। রাখিবন্ধন উপলক্ষে অবশ্য বিশেষ সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়েছিল। ছিল মিষ্টিমুখের আয়োজনও। প্রধান শিক্ষক গৌতম শাসমল জানান, এ দিনের যাবতীয় রাখি ছাত্রছাত্রীরা নিজেরাই স্কুলে তৈরি করেছে। শুধু তাই নয়, তাদের তৈরি রাখি নিয়ে কাঁথি মহকুমার অন্য বেশ কয়েকটি স্কুল রাখিবন্ধন অনুষ্ঠান করে থাকে।

Advertisement

আসলে এটা ওদের শিক্ষারই একটা অঙ্গ। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘আবাসিক স্কুলে বিশেষ পদ্ধতিতে ওদের লেখাপড়ার পাশাপাশি সারাবছর বিভিন্ন বৃত্তিমূলক কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। অন্য স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তাদের তৈরি রাখি দিয়েই অনুষ্ঠান করে জেনে মানসিক প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীরাও তাদের সৃষ্টিশীল কাজে আরও উৎসাহ পায়।’’

এক দেড় মাস আগে থেকেই শুরু হয় কাজ। টুকরো টুকরো করে কাটা নানা রঙের কাগজ, পুঁতি, জড়ি আর পাট। কাঁচি দিয়ে কেটে আর আঠা দিয়ে জুড়ে ওরা তৈরি করে একের পর এক রাখি। দেখতে দেখতে হাজার খানেক রাখি জমা হয় স্কুলের মস্ত হল ঘরে। স্কুলের বৃত্তিমূলক বিভাগের শিক্ষক অনিরুদ্ধ প্রধান জানালেন, “এ বছর পাট দিয়ে বিশেষ রাখি তৈরি করেছিল আমাদের ছাত্রছাত্রীরা। জেলার বিভিন্ন স্কুলে এই পাটের রাখি খুব জনপ্রিয় হয়েছে।”

Advertisement

রাখি বন্ধন উপলক্ষে কাঁথি শহরের বালুচরী লায়ন্স ক্লাবের পক্ষ থেকেও শনিবার বিবেকানন্দ লোকশিক্ষা নিকেতনের দৃষ্টিহীন ও মানসিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের হাতে রাখি পড়ানো হয়।

এগরা মহকুমা জুড়ে সাড়ম্বরে পালিত হল রাখি বন্ধন উৎসব। সকাল থেকে মহকুমার প্রতিটি থানা এলাকায় বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন, ক্লাব, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সহ সরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পথচারীদের হাতে রাখি বেঁধে সম্প্রীতির উৎসব হিসেবে দিনটি পালিত হয়।

এগরা শহরে সকাল ১০ টা নাগাদ তৃণমূলের পক্ষ থেকে পুরসভার পুরপ্রধান শঙ্কর বেরা, তৃণমূল নেতা জয়ন্ত সাউ, কাউন্সিলর হরিপদ বেরা-সহ অন্যান্য নেতারা প্রতিবন্ধীদের হাতে রাখি বেঁধে উৎসবের উদ্বোধন করেন। জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও এগরা শহরের ত্রিকোণ পার্ক এলাকায় পথচলতি মানুষের হাতে রাখি পরিয়ে দেন কংগ্রেস সমর্থকরা। বিকেলে পটাশপুর-২ ব্লকের প্রতাপদিঘিতে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাখি বন্ধন উৎসব পালিত হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী ও পটাশপুরের বিধায়ক জ্যোতির্ময় কর। এছাড়া পটাশপুর-১ ব্লক প্রশাসনের অনুষ্ঠানে ছিলেন নতুন বিডিও রণজিৎ হালদার, বিদায়ী বিডিও বুলবুল বাগচি,সভাপতি কবিতা সাউ প্রমুখ।

মহিষাদল থানা এবং মহিষাদল প্রেস কর্নার-এর যৌথ উদ্যোগে রাখি বন্ধন উৎসব পালন করা হল। মহিষাদলের সিনেমা মোড়ে পথচলতি মানুষের হাতে ও মহিষাদল গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের হাতে রাখি পরানো হয়। এ দিন বিকালে মহিষাদল রাজ মাঠে পুলিশ প্রশাসন একাদশ বনাম মহিষাদল প্রেস কর্নার একাদশের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement