ঘাটাল রেলপথ আন্দোলন কমিটির অনুষ্ঠানে। নিজস্ব চিত্র
রেলপথের দাবিতে এবার গণ আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু হল ঘাটালে।
রবিবার ঘাটাল শহরে সত্যজিৎ রায় মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তৈরি হল রেলপথ আন্দোলন কমিটি। তারা ঘাটালে রেলপথের দাবিতে আন্দোলন সংগঠিত করবে। রেল দফতর থেকে প্রশাসনিক দফতর—সব জায়গাতেই শান্তিপূর্ণ ভাবে ধারাবাহিক আন্দোলন করা হবে বলে জানিয়েছে ওই কমিটি।
মহকুমার সদর শহর ঘাটাল ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্যও বেশ পরিচিত। হাওড়া, হুগলি ও পূর্ব মেদিনীপুরের সীমানা এই শহর। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় পুরনো এই জনপদ সার্বিক ক্ষেত্রে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। ঘাটাল মহকুমার বহু মানুষকে প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের নানা এলাকায় যেতে হয়। তবে ঘাটালে কোনও রেলপথ নেই। এখানকার কাছাকাছি স্টেশন বলতে ৩৪ কিলোমিটার দূরে পাঁশকুড়া এবং ৩৫ কিলোমিটার দূরে চন্দ্রকোনা রোড। বন্যাপ্রবণ এই এলাকার মানুষের যোগাযোগের ভরসা মূলত ঘাটাল-পাঁশকুড়া ও ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাজ্য সড়ক।
এর আগে ২০১৫-১৬ আর্থিক বর্ষের রেল বাজেটে ঘাটালে রেলপথের কথা শোনা গিয়েছিল। হুগলির আরামবাগ থেকে ঘাটালের ইড়পালা পর্যন্ত রেলপথ তৈরির চর্চা শুরু হয়েছিল। ঘোষণার পরে রেলের আধিকারিকরা দু’দফায় ঘাটালের গ্রামগুলি ঘুরে গিয়েছিলেন বলে খবর। নতুন স্টেশনের জন্য নাকি ইড়পালার হড়পুকুর স্থানটি চিহ্নিতও করেছিলেন তাঁরা। তবে ওই টুকুই। নতুন করে আর কোনও কাজ এগোয়নি। রেলের তরফেও আর কেউ আসেননি। তারপর আরও ছ’বার রেল বাজেট হয়েছে। কোনও বারেই ঘাটালে রেলপথের জন্য টাকা বরাদ্দের কথা শোনা যায়নি।
এই আবহে নতুন করে ভেসে উঠল ঘাটালে রেলপথের দাবি। মাস কয়েক আগে ঘাটাল মহকুমার উৎসাহী কয়েকজন মিলে রেলপথের দাবিতে সরব হন। মূলত সমাজমাধ্যমে সেই নিয়ে জোরালো চর্চাও হয়। কোথায় স্টেশন হবে, সেই নিয়ে আলোচনা শুরু হয় সমাজমাধ্যমে। তারপরে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের জন্য কমিটি গড়তে শুরু হয় তৎপরতা। উদ্যোক্তারা মহকুমার পাঁচটি ব্লকের বিভিন্ন ক্লাব ও সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমজনতার সমর্থন পেতে মাইক প্রচারও হয়। রবিবার খাতায়-কলমে রূপ পেল সেই তৎপরতা।
রবিবার রেলপথ আন্দোলন কমিটির পক্ষ থেকে ঘাটাল কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করা হয়। তারপরে সত্যজিৎ রায় মুক্তমঞ্চে হয় মূল অনুষ্ঠান। জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে ২৫ জনের একটি কমিটি গড়া হয়েছে। আন্দোলনকারীদের পক্ষে ঝন্টু চট্টোপাধ্যায়, তাপস কুমার মিশ্র, প্রসেনজিৎ কাপাস, বিবেক ঘোড়ুই, অর্ঘ্য চক্রবর্তীরা জানান, ঘাটাল রেল মানচিত্রে যুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে।