আদিবাসী মিছিলে থমকাল শহর

২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশের প্রস্তুতির শেষবেলায় দলের আদিবাসী শাখা সংগঠনকে পথে নামিয়ে মেদিনীপুরে শক্তি প্রদর্শন করল শাসক দল। তৃণমূলের এসটি-এসসি সেলের ডাকে রবিবার বিকেলে লম্বা এই মিছিলের জেরে শহরের নানা এলাকায় যানজট হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৫ ০০:৪৯
Share:

২১শে জুলাইয়ের প্রস্তুতিতে তৃণমূলের মিছিল মেদিনীপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশের প্রস্তুতির শেষবেলায় দলের আদিবাসী শাখা সংগঠনকে পথে নামিয়ে মেদিনীপুরে শক্তি প্রদর্শন করল শাসক দল। তৃণমূলের এসটি-এসসি সেলের ডাকে রবিবার বিকেলে লম্বা এই মিছিলের জেরে শহরের নানা এলাকায় যানজট হয়। পথচলতি মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা, তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, এসটি-এসসি সেলের জেলা সভাপতি তথা নয়াগ্রামের বিধায়ক দুলাল মুর্মু প্রমুখ। ছিলেন তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্‌ ঘোষ, আশিস চক্রবর্তী, অজিত মাইতি, চূড়ামণি মাহাতোরাও।

Advertisement

২১ জুলাইয়ের সমাবেশের প্রস্তুতির শেষবেলায় দলের আদিবাসী শাখা সংগঠনকে পথে নামিয়ে জঙ্গলমহলের জেলায় কি কোনও বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করল শাসক দল? তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেনবাবু বলেন, ‘‘২১ জুলাইয়ের সমাবেশের সমর্থনে এ দিন মেদিনীপুরে এসটি-এসসি সেলের কর্মসূচি হয়েছে। এখানে বার্তা দেওয়ার কোনও ব্যাপার নেই! মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন।’’

এর আগে সদর শহরে মহিলা তৃণমূল, দলের সংখ্যালঘু সেল, তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মিছিল হয়েছে। এ দিন বিকেলে এসটি-এসসি সেলের মিছিলের আগে সকালে পথে নামে তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষকদের সংগঠন। বিদ্যাসাগর হলের সামনে থেকে শুরু হয় আদিবাসী শাখা সংগঠনের মিছিল। দুপুর থেকেই জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে কর্মী-সমর্থকেরা আসেন। যানজট এড়াতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বড় লরিগুলোকে স্টেডিয়াম রোডের দিকে রাখা হয়।

Advertisement

তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, মিছিলের জেরে যাতে শহরের স্বাভাবিক গতি থমকে ন- যায়, সেই দিকে শুরু থেকেই দলের কর্মী-সমর্থকেরাই নজর রেখেছিলেন। ফলে, পথচলতি মানুষকে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়নি। কোথাও ব্যাপক যানজটেরও সৃষ্টি হয়নি।

এ দিনের মিছিল ছিল বেশ সুসজ্জিত। একদল মহিলা মাথায় কলসি নিয়ে মিছিলে পা মেলান। তাঁদের পরনে ছিল লাল পাড় সাদা শাড়ি। মিছিলে আদিবাসী সংস্কৃতির প্রতীক ধামসা-মাদলও ছিল। মিছিল শেষে শহরের গাঁধীমূর্তির পাদদেশে এক সভায় জেলা নেতৃত্ব বক্তব্য রাখেন। সভার জেরে দুর্ভোগ আরও বাড়ে। কেন শহরের গুরুত্বপূর্ণ পথ আটকে সভা? তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেনবাবুর জবাব, “এটা শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এখানে সভা করা উচিত নয়। সভা আমাদেরও ছিল না! তাই এই জায়গা বেশিক্ষণ আটকেও রাখা হয়নি!’’ তৃণমূলের এসটি- এসসি সেলের কর্মসূচি শেষে জেলার এক পুলিশ কর্তার মন্তব্য, ‘‘নেহাত ছুটির দিন ছিল। কাজের দিনে শহরে এমন কর্মসূচি হলে যে কি হত! শহর সচল রাখতে গিয়ে নিশ্চিত ভাবেই হিমশিম খেতে হত!”

কেন সব শাখা সংগঠনকে দিয়ে সদর শহরে মিছিল করানো হল? শাসক দলের এক জেলা নেতা মানছেন, ‘‘সামান্য কিছু কর্মীর মধ্যে হতাশা আসছে। সংগঠন কর্মসূচির মধ্যে থাকলে এই হতাশা আসে না। দলের মধ্যে মতবিরোধের ঘটনাও (গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব) কম ঘটে।’’

২১শে জুলাইয়ের প্রস্তুতিতে রবিবার দাঁতন-২ ব্লকেও তৃণমূলের সভা ও মিছিল হয়। সাবরা থেকে খাকুড়দা ও সাউরি থেকে খাকুড়দা পর্যন্ত দু’টি পৃথক মিছিল হয়। খাকুড়দায় হয় সভা। ছিলেন তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ, জেলা কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি, তৃণমূলের ওই ব্লকের আহ্বায়ক দুর্গেশ নন্দ, মোহনপুর ব্লক সভাপতি প্রদীপ পাত্র প্রমুখ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement