Pranab Mukherjje

কর্মিসভায় এসেছিলেন প্যাসেঞ্জার ট্রেনে চেপে

Advertisement

বিশ্বসিন্ধু দে

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:৩৬
Share:

১৯৮৬ সালে বেলদায়। ছবি সংশ্লিষ্ট পরিবারের সৌজন্যপ্রাপ্ত

কাছের মানুষ চলে গেলেন। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মৃত্যুর পরে এমনটাই বলেছেন বেলদা, দাঁতন, নারায়ণগড়ের প্রবীণেরা।

Advertisement

প্রণববাবুর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল মূলত বাংলা কংগ্রেস দিয়ে। ১৯৬৭ সালে অজয় মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে বাংলা কংগ্রেস গড়ে উঠেছিল। প্রণববাবু ছিলেন তাঁর অনুরাগী। তখন সেই দলের মজবুত সংগঠন ছিল দাঁতন ও নারায়ণগড়ে।

এলাকার প্রবীণেরা স্মৃতি হাতড়ে বলছেন, ১৯৬৮ সালে দুর্গাপুজোর পরে হাওড়া-পুরী প্যাসেঞ্জার ট্রেনে চেপে দাঁতনে বাংলা কংগ্রেসের কর্মিসভা করতে এসেছিলেন প্রণববাবু। তখন সামনেই ছিল বিধানসভা নির্বাচন। সেই সভা হয়েছিল সরাইবাজারের কাছে তৎকালীন অপরাজিতা সিনেমা হলের সামনে। সেদিনের সভা ছিল প্রার্থী দেবেন্দ্রনাথ দাসের সমর্থনে। দেবেন্দ্রনাথ পরে বিধায়ক হন। ওই সময়েই নারায়ণগড় ও বেলদাতেও যেতেন প্রণববাবু।

Advertisement

সেই সময়ে বেলদায় গাঁধী পার্কের এক অবস্থান সত্যাগ্রহ কর্মসূচির অন্যতম বক্তা ছিলেন প্রণববাবু। দাঁতনের বর্তমান বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান বলেন, ‘‘তখন আমি যুব কংগ্রেস করি। বেলদায় প্রণববাবু এসেছিলেন। আমি মোটরবাইক নিয়ে গিয়েছিলাম তাঁর বক্তব্য শুনতে। দাঁতনেও ওঁর বক্তব্য শুনেছি।’’ পরে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেস তৈরির পরেও দাঁতনে আসেন তিনি।

নারায়ণগড়ে গেলে প্রণববাবু থাকতেন বাংলা কংগ্রেস কর্মী স্বপন দুবের বাড়িতে। স্বপন পরে জেলা কংগ্রেসের নেতা হয়েছিলেন। স্বপন বলেন, ‘‘প্রায় দু’বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে বেলদা, নারায়ণগড়, দাঁতনে ঘুরেছেন প্রণবদা। সভা করেছেন। আমার বাড়িতে তিনি ছাড়াও অজয় মুখোপাধ্যায়, সতীশ সামন্তেরা থাকতেন। আমার মায়ের হাতের রান্নাও খেয়েছেন প্রণবদা।’’ রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে প্রণববাবুকে দিয়ে নিজের লেখা ১৪টি বই উদ্বোধন করিয়েছিলেন স্বপন। বেলদার বাসিন্দা সুমিত দাসের সঙ্গেও প্রণববাবুর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মৃত্যর পরে সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘খাকুড়দার একটি সভায় চেয়ারে বসতে যাবেন। দেখি চেয়ারের একটি পা দুটি তক্তার ফাঁকে ঢুকে আছে। বসলেই পড়ে যেতেন। দেখতে পেয়েই সরিয়ে দিই। পরে একই গাড়িতে বেলদা ফিরেছিলাম।’’

কয়েক বছরের মধ্যেই জাতীয় রাজনীতিতে ঝড়ের গতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি শিকড় ভুলে যাননি। ১৯৯৮ সালে দাঁতনের সোনাকোনিয়ায় টর্নেডো হয়ে প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। সেই সময়ে ত্রাণ নিয়ে এসেছিলেন তিনি। রাষ্ট্রপতি হয়ে যাওয়ার পরেও দাঁতন থেকে আসা আমন্ত্রণ ফেলতে পারেননি। ২০১৭ সালের ১৯ জানুয়ারি দাঁতন গ্রামীণ মেলা উদ্বোধনে এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেবার তাঁকে আনায় বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন মেলার আয়োজক অলোক নন্দী। রীতি অনুযায়ী ওই মেলা প্রতিবছর ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হলেও সে বছর রাষ্ট্রপতির সময় না পাওয়ায় দু’দিন পরে বসেছিল। সেই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন সূর্য নন্দী। তিনি বলেন, ‘‘সে দিন আন্তরিক ব্যবহারে তিনি মুগ্ধ করেছিলেন আমাদের।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement