বাড়ি পাবেন এক লক্ষ মানুষ। — ফাইল চিত্র।
‘আবাস প্লাসে’র তালিকা ধরে যাচাইপর্ব চলেছে। প্রথম পর্যায়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে বাড়ি পেতে পারেন প্রায় এক লক্ষ মানুষ। জেলাস্তরে পর্যালোচনার পরে এমনই অনুমান প্রশাসনের একটি অংশের।
রাজ্যের নির্দেশ ছিল, ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলাস্তরের কমিটি অগ্রাধিকার উপভোক্তার চূড়ান্ত তালিকা অনুমোদন করবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরে কালেক্টরেটের সভাকক্ষে এক বৈঠক হয়েছে। ছিলেন জেলাশাসক আয়েষা রানি সহ অতিরিক্ত জেলাশাসকেরা। ছিলেন এসডিও, বিডিও প্রমুখ। ছিলেন যাচাইয়ের কাজে নিযুক্ত জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরাও। নূন্যতম অনিয়মও বরদাস্ত করা হবে না, কাজে ফাঁক থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বৈঠকে সতর্ক করেছেন জেলাশাসক।
জেলাশাসক মানছেন, ‘‘বৈঠক হয়েছে। কোন ব্লকে কতটা কাজ এগিয়েছে, সে সবই খতিয়ে দেখা হয়েছে।’’ জেলাশাসক বলেন, ‘‘এখন রেজিস্ট্রেশন চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।’’ কোন ব্লকে অগ্রাধিকার উপভোক্তার তালিকায় কতজনের নাম রয়েছে, সে সব খতিয়ে দেখা হয়েছে বৈঠকে। ব্লকওয়াড়ি পর্যালোচনার পরে দেখা যায়, জেলায় অগ্রাধিকার উপভোক্তার তালিকায় ৯৮ হাজারের কিছু বেশি নাম থাকতে পারে। অর্থাৎ, প্রথম পর্যায়ে এই সংখ্যক উপভোক্তাই বাড়ি পেতে পারেন। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এঁদের রেজিস্ট্রেশনের কাজ শেষ হওয়ার কথা। রাজ্যের তেমনই নির্দেশ রয়েছে। সূত্রের খবর, বৈঠকে জেলাশাসক জানিয়েছেন, প্রথম পর্যায়ের রেজিস্ট্রেশনের কাজ ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করে ফেলতে হবে। বিডিওদের এমনই নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। একাধিক মহল মনে করাচ্ছে, প্রথম পর্যায়ে সারা রাজ্যে ১১ লক্ষ বাড়ি বরাদ্দ হওয়ার কথা। সেখানে পশ্চিম মেদিনীপুরই পেতে পারে প্রায় ১ লক্ষ বাড়ি। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য শোনাচ্ছেন, ‘‘লক্ষ্যমাত্রা এখনও চূড়ান্ত নয়।’’
বৈঠকে বিডিওদের জেলাশাসকের নির্দেশ, কোনও অনুপযুক্তের নাম যাতে চূড়ান্ত তালিকায় না থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি, রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলেও পরবর্তী সময়ে অনুপযুক্তের নাম বাদ দেওয়া সম্ভব। পদ্ধতি মেনে সে নাম বাদ দিতেই হবে। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কেন্দ্রীয় বরাদ্দের জট কাটছে। এই প্রকল্পে বরাদ্দ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। কিছু শর্ত রাখা হয়েছে। প্রধান শর্ত, সময় মেনে বাড়ির কাজ করতে হবে। না হলে বাড়ি পিছু জরিমানা হবে। জরিমানার টাকা কেটে নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের তহবিল থেকে। জট কাটার আবহে যাচাই এবং তাকে ঘিরে এই প্রশাসনিক তৎপরতা। ‘ভেরিফিকেশন কমিটি’ ছিল ব্লকস্তরে। এই কমিটিতে ছিলেন বিডিও, যুগ্ম বিডিও, আইসি কিংবা ওসি, বিএলএলআরও প্রমুখ। প্রশাসন সূত্রে খবর, তালিকা ধরে সরেজমিনে যাচাই করেছেন জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, বিডিও প্রমুখ। তালিকায় নাম থাকা অন্তত ২ শতাংশের যাচাই করেছেন জেলাশাসক। অন্তত ৩ শতাংশের যাচাই করেছেন মহকুমাশাসক। অন্তত ১০ শতাংশের যাচাই করেছেন বিডিও। অগ্রাধিকার উপভোক্তার তালিকা গ্রামসভার অনুমোদনের পরেই ব্লক থেকে জেলায় পৌঁছয়।
‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’। এই প্রকল্পে উপভোক্তাপিছু তিন কিস্তিতে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ৬০ শতাংশ টাকা দেয় কেন্দ্র, বাকি ৪০ শতাংশ টাকা দেয় রাজ্য। প্রশাসনের একটি অংশের অনুমান, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রথম পর্যায়ের বরাদ্দ মিলতে পারে নতুন বছরের গোড়ায়।