খড়্গপুর টাউন থানায় সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
খড়্গপুরের সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার চার ঘণ্টার মধ্যেই পাঁচ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতেরা সকলেই ভিন্রাজ্যের। তাঁরা গত দু’দিন ধরে খড়্গপুরে পরিত্যক্ত রেল কোয়ার্টার্সে ছিলেন। সেখানে বসেই গোটা ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। গোটা এলাকা রেইকি করে শুক্রবার খড়্গপুর টাউন থানার গোলবাজারের ওই সোনার দোকানে ডাকাতি করেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। কী ভাবে ওই ডাকাতদলের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে কথাও জানিয়েছেন এসপি। পাশাপাশি, খড়্গপুরের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে যে জেলা পুলিশ সর্বদা তৎপর, সে বার্তাও দিয়েছেন ধৃতিমান।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, খড়্গপুরের রেলের পরিত্যক্ত একটি কোয়ার্টারে বসে ডাকাতির ছক কষা হয়েছিল। ধৃত পাঁচ জনই ভিন্রাজ্যের বাসিন্দা। তবে তদন্তের স্বার্থে তাঁদের পরিচয় জানাতে রাজি হয়নি পুলিশ। এসপির দাবি, ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার গোপীবল্লভপুরের বেলিয়াবেড়া থানার রান্টুয়া এলাকা থেকে শুক্রবার বিকেলে ৫ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, একটি ছুরি, বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন এবং একটি গাড়ি আটক করা হয়েছে। ধৃতিমান বলেন, ‘‘আমরা ঘটনার খবর পেয়ে অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে ডাকাতদলের গাড়ির পিছু নিই। একটা দল যায় ঝাড়খণ্ডের দিকে। ওড়িশার দিকে অন্যটি। দু’দিন আগেই ওরা খড়গপুর শহরের পরিত্যক্ত রেল কোয়ার্টারে আশ্রয় নেয়। রেইকিও করে। কোন রাস্তা দিয়ে ঢুকবে, আর কোন রাস্তা দিয়ে কী ভাবে বেরিয়ে যাবে তারও ছক কষে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, খড়্গপুর শহর থেকে ঝাড়খণ্ডের রাস্তা ধরে পালানোর চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। ঝাড়গ্রামের চিচিরা পোস্টে নাকা চেকিংয়ে ধাক্কা মেরে ডাকাতদের গাড়িটি বেরিয়ে যায়। এর পর তাঁরা গাড়ি ঘুরিয়ে নেন ওড়িশার দিকের রাস্তায়। ধৃতিমানের কথায়, ‘‘রান্টুয়া এলাকায় রাস্তার উপর গাড়ি রেখে জামা-প্যান্ট খুলে ধানের খেতে ওরা হামাগুড়ি দিচ্ছিল। ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালিয়ে ওই পাঁচ জনকে ধরা হয়েছে।’’ পুলিশ সুপার আরও দাবি করেছেন, খড়গপুরে রেলের পরিত্যক্ত কোয়ার্টারগুলিতে বহিরাগতদের উপরে নজরদারি চালানো হচ্ছে, যাতে অবাঞ্ছিত লোকজন এসে কোনও খারাপ কাজ করতে না পারে। সোনার দোকানে সিসি ক্যামেরা বসানো ছাড়াও তিনি সশস্ত্র পাহারার ব্যবস্থা রাখার পরামর্শও দেন। শুক্রবার রাতে খড়্গপুর টাউন থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন পুলিশ সুপার। ধৃতদের শনিবার আদালতে হাজির করানো হবে।