মারমুখী: নারায়ণগড় থানার সামনে। নিজস্ব চিত্র
নারী নির্যাতন, শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার অভিযোগে নারায়ণগড় থানা ঘেরাও ও স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপির মহিলা মোর্চা। তা নিয়েই ধুন্ধুমার হয়ে গেল শনিবার। চলল জলকামান। পুলিশকে মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ করল বিজেপি। তবে কেউই অভিযোগ মানেনি। শনিবার রাত পর্যন্ত ৭ জন বিজেপি সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিন নারায়ণগড়ের চাতুরিভাড়া থেকে শুরু হওয়া মিছিলের থানা পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। তবে থানা থেকে বেশ কিছুটা দূরে ব্যারিকেড করে মিছিল আটকায় পুলিশ। সেখানে প্রচুর পুলিশকর্মী মোতায়েন ছিলেন। রাখা ছিল জলকামানও।
পুলিশের দাবি, প্রথমে মহিলারাই ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। দলের পতাকা লাগানো লাঠি নিয়ে পুলিশ কর্মীদের দিকে তেড়েও আসেন। কয়েকজন মহিলা পুলিশ কর্মী আহত হন। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘বিজেপি কর্মীরাই থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে এসে গোলমাল করেছে। এসডিপিও ছাড়াও আমাদের ৬ জন কনস্টেবল, ১ জন এসআই জখম হয়েছে।’’ জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারের দাবি, ‘‘লাঠিচার্জ হয়নি। তবে পুলিশকে মারলে তো চুপ থাকা যায় না। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে। আমরা মামলা রুজু করছি।’’
পুলিশ লাঠিচার্জের কথা না মানলেও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে যাওয়া ভিডিয়োয় অবশ্য পুলিশকে লাঠি চালাতেই দেখা গিয়েছে (আনন্দবাজার সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি)। বিজেপির দাবি, মহিলা পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে পুরুষ পুলিশ কর্মীরাও লাঠিচার্জ করেছে। তাদের কয়েকজন মহিলা সমর্থক গুরুতর আহত হয়েছেন।
জেলা মহিলা মোর্চার নেত্রী উমা বিশ্বাসের দাবি, ‘‘পুলিশের পক্ষপাতিত্ব, দলবাজি, তদন্তে গড়িমসি, বিজেপির কর্মীদের অন্যায়ভাবে মামলায় জড়ানোর বিরুদ্ধেই আমরা স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলাম। সেখানেই লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ।’’ তবে পাল্টা পুলিশকে মারধরের কথা স্বীকার করেননি তিনি।
বিজেপির দাবি, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ব্যারিকেড করে এসডিপিও-র উপস্থিতিতে লাঠিচার্জ করা হয়েছে। শম্পা মণ্ডল, অর্পিতা দাস, সঞ্জুলা দাস, কৃষ্ণা শতপথি, প্রিয়াঙ্কা ত্রিপাঠী, কাবেরী মণ্ডল, রুমা দাস- সহ তাদের কয়েকজন মহিলা সমর্থক বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি। তাঁরা এদিন পুলিশের মারেই আহত হয়েছেন। খড়্গপুরের এসডিপিও সুকোমলকান্তি দােসর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘আমাকে ও নারায়ণগড় থানার কয়েকজন আধিকারিককে টেনে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। পুলিশের ১০ জন আহত হয়েছেন। তারপরেও আমরা স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছি।’’