উদ্ধার হয়েছে এই ব্ল্যাক ক্রাউন নাইট হিরন প্রজাতির পাখি। নিজস্ব চিত্র
গুলি-বোমার ‘আস্ফালনে’ একসময় সন্ত্রস্ত হয়ে থাকতে হত। বারুদের গন্ধে ভারী হয়ে থাকত এখানকার বাতাস। গত পঞ্চায়েত ভোটের দিনেও এখানে রক্ত ঝরেছে। সেই কেশপুরেই এক মরণাপন্ন পাখিকে উদ্ধার করে বন দফতরের হাতে তুলে দিলেন গ্রামের ছেলেরা!
কেশপুরের বিকলচকের বাসিন্দারা পাখি উদ্ধার করায় প্রশংসা করেছেন কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘ওই গ্রামের কয়েকজন খুব ভাল কাজ করেছেন। পাখির প্রাণ বাঁচিয়েছেন। ওঁরা না উদ্ধার করলে খারাপ কিছুও হতে পারত। সত্যিই ওদের উদ্যোগ প্রশংসাযোগ্য।’’
মঙ্গলবার বিকলচকে রাস্তার ধারে ওই পাখিকে পড়ে থাকতে দেখেন শেখ মিনাল আলি-সহ গ্রামের কয়েকজন। পাখিটি উড়তে পারছিল না। প্রায় মরণাপন্ন অবস্থা ছিল। মিনালের কথায়, ‘‘সকালে দেখি রাস্তার ধারে পাখিটা পড়ে রয়েছে। কী সুন্দর দেখতে। আগে কখনও গ্রামে এই পাখি দেখিনি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামের কয়েকজনকে ডাকি। পাখিটাকে ধরার ব্যবস্থা করি। পরে বিডিও-র কাছে নিয়ে যাই।’’ বিডিও বন দফতরকে খবর দিয়েছিলেন। সেই মতো বনকর্মীরা বিডিও-র দফতরে আসেন। এখানেই বিকলচকের ছেলেরা ওই পাখিকে বনকর্মীদের হাতে তুলে দেন। বন দফতর সূত্রে খবর, এই পাখির নাম ‘ব্ল্যাক ক্রাউন নাইট হিরন।’ অনেকে একে ‘রাতের হিরন পাখি’ নামে ডাকেন। অনেকের কাছে পাখিটি ‘কালো মুকুট চক্রবাক’ নামেও পরিচিত। ওই সূত্র জানাচ্ছে, এটি দেশীয় পাখিই। ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহার কথায়, ‘‘এই পাখি যে দেখা যায় না তা নয়। তবে খুব কম। বলতে গেলে বিলুপ্তপ্রায়।’’ উদ্ধার হওয়া পাখির চিকিৎসা শুরু করেছেন বনকর্মীরা। শেখ জিয়াবুল আলি, তৌফিক মল্লিক, শেখ আলকেশ আলিরা বলছিলেন, ‘‘পাখিটার প্রাণ বাঁচাতে পেরে আমাদের নিজেদেরও ভাল লাগছে। পাখিটা ভাল থাকুক।’’
ফের এই পাখি আকাশে ডানা মেলল বলে!