প্রতীকী ছবি।
ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। পশ্চিম মেদিনীপুরেও কয়েকদিন ধরে লাগাতার নতুন করোনা সংক্রমিতের খোঁজ মিলছে। অনেকে অবশ্য সময় মতো করোনা টিকা নিচ্ছেন না। উদ্বেগ সেখানেই। নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও অনেকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ় নেননি। অনেকে টিকার প্রিকশনারি ডোজ় নেননি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজ্যের সব জেলার জেলাশাসক এবং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। সকলে যাতে সময় মতো করোনা টিকার ডোজ় নেন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করারই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবের চিঠি এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক আয়েষা রানির দফতরেও। চিঠি এসেছে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদার দফতরেও। টিকাকরণে ‘মোবাইল টিম’- এর কাজের উপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ‘মাইক্রো প্ল্যান’ তৈরির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ় এবং প্রিকশনারি ডোজ়ের মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান যে ৯ মাস থেকে কমিয়ে ৬ মাস করা হয়েছে, সেটাও মনে করানো হয়েছে চিঠিতে। জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘মানুষজনকে সচেতন করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকার ডোজ় নেওয়ার কথা জানানো হচ্ছে।’’ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদা বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কারা দ্বিতীয় ডোজ় কিংবা প্রিকশনারি ডোজ় নেননি, স্বাস্থ্যকর্মীরা সে খোঁজখবর করছেন। তাঁদের ওই ডোজ দেওয়ার ব্যবস্থাও করছেন।’’ একাংশ স্বাস্থ্যকর্মীর মতে, তাঁরা দেখছেন, বয়স্কদের মধ্যেই প্রিকশনারি ডোজ় না নেওয়ার প্রবণতা বেশি। বিষয়টি উদ্বেগেরই।
চিকিৎসকদের একাংশের মতে, সাধারণ মানুষের একাংশের অসচেতনতাই নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়ার একটা বড় কারণ। করোনা বিধি মানতেই হবে, মনে করাচ্ছেন তাঁরা। গত কয়েক দিন ধরে করোনা যে ভাবে বাড়ছে, তাতে অনেকেরই প্রশ্ন, সংক্রমণ বৃদ্ধির এই হারই কি করোনার চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। কী কারণে আবার দাপট বাড়ছে করোনার, সে প্রশ্নের সদুত্তর এড়িয়ে জেলার এক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের দাবি, ‘‘গত কয়েক দিনে নতুন করে বেশ কয়েকজন সংক্রমিত হয়েছেন। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতেই হবে।’’ মেদিনীপুর মেডিক্যালের এক চিকিৎসক অবশ্য সরাসরিই বলছেন, ‘‘সংক্রমিতের সংখ্যা যে ভাবে বাড়ছে, তাতে যে কোনও সময়েই পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। যার একটা বড় কারণ অবশ্যই এক শ্রেণির মানুষের উদাসীনতা। শুধু বিধি উপেক্ষা করাই নয়, অনেকে তো প্রিকশনারি ডোজ় নিতেও অনীহা দেখাচ্ছেন।’’
কেন অনীহা? মেদিনীপুরের এক চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণ, ‘‘অনেকেরই ভয় কেটে গিয়েছে। এটা বোঝার চেষ্টা করছেন না যে, প্রিকশনারি ডোজ় নেওয়া থাকলে করোনা সংক্রমিত হলেও সঙ্কটজনক হওয়া থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত থাকা যাবে।’’ ষাটোর্ধ্বদের বিনামূল্যে প্রিকশনারি ডোজ দিচ্ছে সরকার। তাতেও অনীহা অনেকের! জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে কারা প্রিকশনারি ডোজ় নেননি, তা খুঁজে বার করার কাজ শুরু হয়েছে।’’