পাঁশকুড়া স্টেশনে প্রতিদিনের ছবি। নিজস্ব চিত্র
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় অন্যতম ব্যস্ত স্টেশন পাঁশকুড়া। জংশন স্টেশন হওয়ায় এখান থেকে হাওড়া, খড়্গপুর, হলদিয়া ও দিঘা যাওয়া যায়। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনে সকাল থেকেই টিকিট কাটার দীর্ঘ লাইন পড়ে। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, টিকিট কাউন্টার ও এটিভিএম মেশিন থাকলেও তার সবকটি চালু না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়। যার জেরে অনেকে ট্রেন ধরতে পারেন না। এমনকী দীর্ঘ লাইনে বহুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার জন্য অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে।
পাঁশকুড়া স্টেশনের টিকিট কাউন্টার ঘুরে দেখা গেল ৬টি টিকিট কাউন্টার ও ৪ টি এটিভিএম মেশিন রয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ, সকালে কাজের সময় অধিকাংশ দিনই মাত্র দুটি বা তিনটি টিকিট কাউন্টার খোলা থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাত্র একটি কাউন্টার বাদে বাকিগুলি বন্ধ হয়ে যায়। চারটি এটিভিএম মেশিনের মধ্যে আবার তিনটিই বিকল। ফলে প্রতিদিনই টিকিটের জন্য লম্বা লাইন পড়ে। যার কারণে অনেক সময় ট্রেনও মিস হয়ে যায়। অথচ সমস্যা মেটাতে স্টেশন ম্যানেজার বা রেলের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়না।
কিন্তু এই পরিস্থিতি কেন?
স্টেশন ম্যানেজার মেঘরায় হাঁসদা বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই এই স্টেশনে পর্যাপ্ত কর্মী নেই। তাই সমস্ত টিকিট কাউন্টার খুলতে পারি না।’’ এটিভিএম মেশিন বন্ধ থাকা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি। যাত্রীদের অভিযোগ সকাল ৮টা থেকে সংরক্ষিত আসনের টিকিট কাউন্টার খোলা রাখার নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ দিনই আধঘণ্টা পরে খোলে কাউন্টার। পাঁশকুড়ার বাসিন্দা বিশ্বনাথ সামন্ত বলেন, ‘‘ব্যবসার কাজে প্রায়ই হাওড়ায় যেতে হয়। কিন্তু স্টেশনে টিকিট কাটতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়।’’ দাসপুরের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক প্রদীপ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ব্যক্তিগত প্রয়োজনে মাঝেমধ্যে হাওড়া ও মেদিনীপুর যেতে হয়। টিকিট কাটার জন্য এটিভিএম মেশিন ব্যবহার করতাম। কিন্তু ইদানীং ভেন্ডার না থাকায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে কাউন্টার থেকে টিকিট কাটতে হয়। ফলে মাঝেমধ্যে ট্রেন মিস করি।’’
সামনেই পুজো। জেলা থেকে প্রচুর মানুষ ট্রেনে কলকাতায় যান ঠাকুর দেখতে। কিন্তু এমন অবস্থায় পুজোর ভিড় সামাল দিতে রেল কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নেন সেটাই দেখার।