পানীয় জল সরবরাহ নিয়ে পাঁশকুড়া পুর এলাকার বাসিন্দাদের তেমন অভিযোগ নেই। তবে জল আনতে গিয়ে হয়রানি নিয়ে সরব অনেকেই। পুরবাসীর অভিযোগ এলাকার অধিকাংশ ওয়ার্ডে জলের ট্যাপকলগুলি ভাঙা। ফলে প্রয়োজনের তুলনায় জল অপচয় হয় অনেক বেশি। তা ছাড়া ওই অবস্থায় জল সংগ্রহ করতেও বেশ অসুবিধায় পড়তে হয়। আর ভাঙা ট্যাপকল নিয়ে এ হেন অভিযোগে জেরবার পুর কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে পুর এলাকায় জল সরবরাহ করতে গিয়ে প্রত্যেক মাসে গড়ে বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে সাড়ে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার। যাতে হিমশিম অবস্থা পুরসভার।
বছর পাঁচেক আগে পাঁশকুড়া পুর এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য ৪০ কোটি টাকা ব্যয়েএকটি জলপ্রকল্প শুরু হয়। ওই প্রকল্পে পুরসভার ৩, ৭ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১ লক্ষ ৮০ হাজার গ্যালন জলধারণ ক্ষমতাযুক্ত তিনটি রিজার্ভার তৈরি করে পুরসভা। ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে জলের শেষ পর্যায়ের পরীক্ষা না হওয়ায় ওই জল এখনও পান করার অনুমতি দেয়নি পুরসভা। দিনে দু'বার তিন ঘণ্টা করে ওই জল সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
পানীয় জলের জন্য পুরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে একাধিক সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়েছে পুরসভা। সেখান থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় জল সরবরাহ করা হয়। অধিকাংশ জায়গায় দিনে তিনবার ৩-৪ ঘণ্টা সাব মার্সিবল পাম্প চালানো হয়। কিন্তু সেই জলে যতটা এলাকার মানুষের জল পাওয়ার কথা তা হচ্ছে না। কারণ অধিকাংশ জায়গায় ট্যাপকলগুলি ভেঙে যাওয়ায় অনবরত জল পড়ে নষ্ট হচ্ছে। জলের জন্য পুর এলাকার বাসিন্দাদের কোনও কর দিতে হয় না। অথচ জল সরবরাহ ঠিক রাখতে একাধিকবার সাব মার্সিবল পাম্প চালানোর জন্য প্রচুর বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। ফলে বিলও বাড়ছে। তা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে পুরসভার ঘাড়ে। মাসে গড়ে সাড়ে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা বিদ্যুতের বিল গুনতে হচ্ছে।
পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর কল্যাণ রায় বলেন, ‘‘জলের অপচয় রুখতে পুরসভার নজরদারি প্রয়োজন। না হলে বিদ্যুতের খরচ আরও বাড়বে।’’ পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান নন্দকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘এক শ্রেণির মানুষ পুরসভার বদনাম করতে রাতের অন্ধকারে কলগুলি ভেঙে দিচ্ছে। এতে জলের অপচয় বাড়ছে। এলাকার মানুষকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকচে বলেছি। ভাঙা ট্যাপকলগুলি দ্রুত মেরামত করার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’