প্রতীকী ছবি। ফাইল চিত্র
দেশে করোনা সংক্রমিতদের অক্সিজেনের জোগান দিতে কার্যত দিশেহারা অবস্থা। ওই পরিস্থিতি যাতে পূর্ব মেদিনীপুরে দেখা না যায় এবং আক্রান্তরা হাসপাতালের শয্যাতেই যাতে অক্সিজেন পান, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক হাসপাতালে চালু হতে চলেছে ‘সেন্ট্রালাইজড’ (কেন্দ্রীয়ভাবে) অক্সিজেন যোগানের ব্যবস্থা।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, কাঁথি, হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল এবং পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এই পরিকাঠামো চালু হবে। হলদিয়া, কাঁথি এবং পাঁশকুড়ার হাসপাতালে ২০০টি করে শয্যায় এই পদ্ধতির মাধ্যমে সংক্রমিতেরা পরিষেবা পাবেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ‘সেন্ট্রালাইজড’ অক্সিজেন পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হাসপাতালগুলিতে একটি করে অক্সিজেন ট্যাঙ্ক তৈরি করা হবে। সেই ট্যাঙ্ক থেকে পাইপের মাধ্যমে একাধিক শয্যায় ওই অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া যাবে। এর ফলে একই সময়ে একাধিক রোগী অক্সিজেন পাবেন।
করোনার আবহে অক্সিজেনের সিলিন্ডারেরের ব্যবহার কমিয়ে দ্রুত অক্সিজেন সরবরাহের জন্য এই ‘সেন্ট্রালাইজড’ সরবাহ ব্যবস্থা গড়া হচ্ছে। বর্তমানে জেলায় কেবলমাত্র এগরা মহকুমা হাসপাতালে ৩০০ শয্যায় ওই ব্যবস্থা চালু রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক স্মিতা পাণ্ডে বলেন, ‘‘আগামী ২১ দিনের মধ্যে পাইপের মাধ্যমে অক্সিজেন দেওয়া যাতে চালু করা যায়, সেই জন্য পদক্ষেপ করা হয়েছে। এই কাজে একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হবে। দ্রুত পরিকাঠামো গড়ার জন্য ওই সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হবে।’’
এ দিকে, জেলাতে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪০০-র গণ্ডি ছাড়িয়েছে। সংক্রমণে লাগাম টানতে একগুচ্ছ বিডিওদের একগুচ্ছ নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রতি ব্লকে ‘র্যাপিড রেসপন্স টিম’ তৈরি করতে হবে। এই দলের কাজ হবে গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকা আক্রান্তদের কাউন্সেলিং করা ও ওষুধপত্র বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া। এছাড়া, প্রতি ব্লকে কন্ট্রোল রুম খোলা, ‘টেলি-মেডিসিনে’র ব্যবস্থা করা, প্রতি ব্লকে করোনার জন্য স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে। ব্লকে সেফ হোমের জন্য ভবন চিহ্নিত করার পাশাপাশি সেখানে ক’টি করে অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, তা নথিভূক্ত করতে হবে। এ প্রসঙ্গে জেলাশাসক বলছেন, ‘‘জেলার বেশিরভাগ ব্লকেই র্যাপিড রেসপন্স দল তৈরি হয়ে গিয়েছে। তারা ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছে।’’
এ দিন হলদিয়া ভবনে শ্রম দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বরুণ রায স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে জেলার কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে মূল্যায়ন করা হয়েছে।