Heavy Rainfall

Accident: টানা বৃষ্টিতে ভাঙল মাটির দেওয়াল, মৃত্যু

গোদাপিয়াশাল থেকে গোবরুর মাঝে এক জায়গায় রেললাইনে ধস নেমেছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৫২
Share:

জলমগ্ন বক্সিবাজার (বাঁ দিকে)। জল বেড়েছে ক্ষীরপাইয়ের কেঠে খালে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল ও কৌশিক সাঁতরা

দুর্যোগে পশ্চিম মেদিনীপুরে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। ৫ জনই মারা গিয়েছেন দেওয়াল চাপা পড়ে।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে কেশপুরের আমড়াকুচিতে মারা গিয়েছেন অরুণ সাঁত (৪৫) নামে একজন। বুধবার সকালে মেদিনীপুর সদর ব্লকের জামকুন্ডায় কোহিনূর বিবি (৫২) নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এদিন শালবনিতে একটি চাতাল পেরোনোর সময়ে একটি গাড়ি জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল। স্থানীয়েরা সেই গাড়ির চালককে উদ্ধার করেছেন। গোদাপিয়াশাল থেকে গোবরুর মাঝে এক জায়গায় রেললাইনে ধস নেমেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন রেলের আধিকারিকেরা। আপ লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পরে লাইন মেরামতের কাজ শুরু হয়।

মেদিনীপুর সদর ব্লকের জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিধায়ক দীনেন রায়। মেদিনীপুর সদরে ১২টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে প্রায় ৫০০ জন মানুষ রয়েছেন বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর। প্রায় দেড় হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিছু বাড়ি ভেঙেছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘জলমগ্ন এলাকার মানুষকে দ্রুত সরানো হয়েছে। না- হলে সমস্যা আরও বাড়তে পারত।’’ হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কংসাবতী, শিলাবতী নদীর জলস্তর বাড়ছে। আজ, বৃহস্পতিবারও বৃষ্টি চলারই কথা। বেলার দিকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে। জানা যাচ্ছে, শুধু মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার দুপুর ১টা পর্যন্তই মেদিনীপুরে বৃষ্টি হয়েছে ২৩০ মিলিমিটার! দুর্গতদের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছনো হচ্ছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। এদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য বিডিওদের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। তিনি বলেন, ‘‘অতিবৃষ্টিতে বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে। অনেককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। তাঁদের ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে।’’

Advertisement

নারায়ণগড়ের সরিষাগেড়িয়া থেকে পলিথিনে মুড়ে দেহ নিয়ে এল পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

মঙ্গলবার রাতে কেশিয়াড়ির খাজরা এলাকার ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যু হয় বিজলি পাতরের (৩০)। বুধবার দুপুরে নারায়ণগড়ের কাশীপুর পঞ্চায়েতের সরিষাগেড়িয়ায় দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় অহল্যা সাঁইয়ের (৪৫)। কেশিয়াড়ি-খড়্গপুর ৫ নম্বর রাজ্য সড়ক ডুবে গিয়েছে। নারায়ণগড়, দাঁতন, মোহনপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। নারায়ণগড়ের পোক্তাপোল, জ্যাঠাগেড়িয়া গ্রামের লোকজন রেল লাইনের ধারে ও জাতীয় সড়কের ওপর তাঁবু খাটিয়ে বসবাস শুরু করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় নৌকা নামানো হয়েছে।

খড়্গপুর-১ ব্লকের পশ্চিম পাথরিতে মাটির বাড়ি ধসে মৃত্যু হয়েছে রাখাল হেমব্রম (৩৮) নামে এক যুবকের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবা-মা, দুই বোনকে নিয়ে সেখানে থাকতেন রাখাল। টানা ভারী বৃষ্টি হওয়ায় মঙ্গলবার রাতে পাশেই দাদার বাড়িতে গিয়ে শুয়েছিলেন বাবা-মা ও দুই বোন। মাটির বাড়িতে একাই ঘুমোচ্ছিলেন রাখাল। বুধবার সকালে দেখা যায় মাটির বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে খাটের উপরেই মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। তাঁর দাদা বাবলু হেমব্রম বলেন, “ওই মাটির বাড়ির অবস্থা খুব খারাপ ছিল না। কিন্তু পাশের দুর্বল একটি মাটির দেওয়াল এই বাড়িতে হেলে যাওয়াতেই দুর্ঘটনা।’’ এ দিন রাখালের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দীনেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement