হনহনিয়ে হাঁটায় তিনি তুলনাহীন। ইতিমধ্যে কলকাতা, শিলিগুড়ি, হাওড়ায় ভোট-প্রচারে বেরিয়ে হেঁটেছেন তিনি। এ বার শহর মেদিনীপুরও দেখবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রা কর্মসূচি।
এতদিন মেদিনীপুরে এসে মূলত জনসভাই করেছেন মমতা। কখনও সভা হয়েছে মেদিনীপুর কলেজ মাঠে, কখনও এলআইসি মোড়ে। এ বার আর সভা নয়, আজ, শুক্রবার মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী মৃগেন মাইতির সমর্থনে পদযাত্রা হবে শহরে। তাতে পা মেলাবেন তৃণমূল নেত্রী। মেদিনীপুর কলেজ মাঠে হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়েছে। কপ্টারে এসে এখানেই নামবেন মুখ্যমন্ত্রী। কলেজ মাঠের সামনে থেকেই শুরু হবে পদযাত্রা। ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সারা হয়েছে। প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন মৃগেনবাবু নিজে। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রা ঘিরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে। পদযাত্রায় বিপুল সাড়া পড়বে।’’
আজ, শুক্রবার লালগড় এবং গোয়ালতোড়ে অবশ্য জনসভা-ই করবেন মমতা। তাহলে মেদিনীপুর শহরে পদযাত্রা কেন?
তৃণমূলের জেলা নেতারা জানাচ্ছেন, এই সিদ্ধান্ত খোদ দলনেত্রীর। তাঁদের ধারণা, প্রচুর মানুষের কাছে পৌঁছতেই এই সিদ্ধান্ত। বিরোধীরা অবশ্য এর ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। সিপিএমের মেদিনীপুর শহর জোনাল সম্পাদক সারদা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উনি নিজেই বলেছেন ‘আমি ২৯৪টি কেন্দ্রে প্রার্থী’। এতেই বোঝা যায় নিজের দলের প্রার্থীদের উপরও ওঁর ভরসা নেই। এখন মনে হচ্ছে কর্মীদের উপরও ভরসা রাখতে পারছেন না। তাই নিজেই পথে নামছেন।’’
ইতিমধ্যে শুক্রবারের পদযাত্রাকে সামনে রেখে শহরে মাইকে প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল। সব ওয়ার্ড থেকে দলের কর্মী-সমর্থকেরা এই পদযাত্রায় সামিল হবেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। পাশাপাশি, মেদিনীপুর বিধানসভার অন্তর্গত গ্রামীণ এলাকা থেকেও দলের কর্মী-সমর্থকেরা আসবেন।
প্রস্তুতি দেখতে বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবারও কলেজ মাঠে আসেন মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী মৃগেনবাবু। ইতিমধ্যে কলেজ মাঠে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হেলিপ্যাডের অদূরেই করা হয়েছে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প। মাঠে ঢোকার গেটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার বিকেলে কলেজ মাঠের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হবে। যাবে গোলকুয়াচক হয়ে বটতলাচকের দিকে। বটতলাচক থেকে নান্নুরচক হয়ে কেরানিতলার দিকে। কেরানিতলা থেকে জর্জকোর্ট রোড হয়ে জুগনুতলার দিকে। জুগনুতলা থেকে জগন্নাথমন্দিরচক হয়ে নতুনবাজারের দিকে। নতুনবাজার পেরোনোর পরেই পদযাত্রা শেষ হবে। এখনও পর্যন্ত এই সূচিই চূড়ান্ত রয়েছে। কলেজ মাঠ থেকে বটতলাচক, কেরানিতলা, জর্জকোর্ট রোড হয়ে নতুনবাজারের দূরত্ব প্রায় ছ’কিলোমিটার। দলনেত্রীর পদযাত্রার ফলে শহরে নির্বাচনী প্রচারে ঝড় উঠবে বলেই মনে করছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।