এই জমিতেই তৈরি হবে বিদ্যুতের সাব-স্টেশন। নিজস্ব চিত্র
এলাকায় বন্যার পরিস্থিতির মাথায় রেখে ঘাটাল শহরে পৃথক সাব-স্টেশন তৈরি করবে বিদ্যুৎ দফতর। এর ফলে বন্যা ছাড়াও লোডশেডিং, লো-ভোল্টেজের সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন ঘাটালবাসী। ঘাটাল শহরের কুশপাতার বেলপুকুরে নতুন ওই সাব-স্টেশনটি তৈরি হবে। ৩৩/১১ কেভি’র স্টেশনটি তৈরি জন্য ন’কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বিদ্যুৎ দফতরের রিজিওনাল ম্যানেজার শৌভিক বেরা বলেন, “ঘাটাল শহরের কুশপাতায় ওই সাব-স্টেশনটি তৈরি হবে। সেটি চালু হলে ঘাটাল শহরে বড় রকমের বন্যাতেও বিদ্যুতের কোনও সমস্যা থাকবে না। টাকা বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। কাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলছে।” ঘাটাল পুরসভার চেয়ারম্যান তুহিন বেরা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই ঘাটাল শহরের জন্য পৃথক ওই বিদ্যুতের সাব-স্টেশন তৈরির চেষ্টা করছে পুরসভা। ঘাটালবাসীর কথা মাথায় রেখে ওই সাব-স্টেশনের সবুজ সঙ্কেত দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।”
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে ঘাটাল ব্লকের বরদা চৌকান সংলগ্ন নির্মলবাজার সাব-স্টেশন থেকে ঘাটাল শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। কার্যত ঘাটাল ব্লকের একাংশে ওই স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তার ফলে বন্যার সময় ব্যাপক সমস্যা তৈরি হয়। বড় বন্যায় নির্মলবাজার স্টেশনটি জলে ডুবে যায়। তখন ঘাটাল শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরিস্থিতির সামাল দিতে অস্থায়ী ভাবে দাসপুর থেকে সংযোগ করে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু রাখা হয়। এতে শহরের সব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকে না। তা ছাড়া প্রতি বছরই গরমে লো-ভোল্টেজ এবং ঘনঘন লোডশেডিং ঘাটাল শহরে একটি নিত্য সমস্যা। নির্মলবাজার থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হওয়ায় গ্রীষ্মকালে ব্যাপক সমস্যায় পড়েন শহরের বাসিন্দারা। সেই সময় গ্রামীণ এলাকায় অগভীর নলকূপগুলি চালিয়ে জমিতে সেচ দেন কৃষকেরা। তার সঙ্গে হিমঘরগুলিও চালু থাকে। তখনও বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা যায়। এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে দীঘর্দিন ধরেই ঘাটাল শহরে আলাদা একটি সাব-স্টেশন তৈরির জন্য উদ্যোগ করেছিল ঘাটাল পুরসভা। শেষমেশ সাব-স্টেশন তৈরির টাকা বরাদ্দ হওয়ায় খুশি ঘাটালবাসী।
জানা গিয়েছে, নতুন সাব-স্টেশনটি তৈরি হলে ঘাটাল শহরে বিদ্যুতের কোনও সমস্যা থাকবে না। বন্যার সময় ঘাটাল শহরের বিদ্যুৎ পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক থাকবে। লো-ভোল্টেজ এবং লোডশেডিংও তখন আর হবে না। পুরসভা জানিয়েছে, কুশপাতার বেলপুকুরে ওই সাব-স্টেশন তৈরি হবে।
জমি বিদ্যুৎ দফতরকে হস্তান্তর করে দেওয়া হয়েছে। কয়েক বছর আগে থেকেই ওই সাব-স্টেশন তৈরির জন্য জমি খোঁজার কাজ চলছিল। এক সময় হরিসিংহপুরে জমি চিহ্নিত হয়েছিল। ওই জমিতে স্টেশন তৈরির উদ্যোগ করা হয়।
যদিও জমি জটে ওই সময় প্রকল্পটি আটকে যায়। নতুন করে ফের তৎপর হয় বিদ্যুৎ দফতর। এরপর বেলপুকুরে প্রয়োজনীয় জমি পাওয়ার পরই চলতি মাসেই সাব-স্টেশনের জন্য টাকামঞ্জুর হয়।