আদালতে ধৃতরা। — নিজস্ব চিত্র।
প্রতিবেশীর মারে খুন হলেন এক প্রৌঢ়া। সোমবার সন্ধ্যায় দাসপুর থানার বেলেঘাটা এলাকার ঘটনা। মৃতার নাম বিজয়া বারিক (৫৬)। ঘটনায় এক দম্পতি-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী মামনি দোলইয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন পূর্বপাড়ার বাসিন্দা বিজয়াদেবী। ফেরার সময় একটি কুকুর বিরক্ত করায় ঢিল ছুঁড়ে মারতে গিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সে সময় পাশের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন কল্পনা জানা। শুরু হয় বচসা। বিজয়াদেবী তাঁর বাড়িতে ইট ছুঁড়েছেন বলে দাবি করেন কল্পনাদেবী।
বচসা চলাকালীনই কল্পনার খুড়তুতো ভাই তারক বেরা ও স্বামী শুকদেব জানা বেরিয়ে এসে মারধর শুরু করেন বলে অভিযোগ। বিজয়াদেবীর ছেলে আনন্দ বারিক বলেন, ‘‘লাথি, ঘুসি, চড় মেরে চুলের মুঠি ধরে রাস্তার পাশের একটি সিমেন্টের খুঁটিতে মাকে ফেলে দেয় ওরা।’’ বিজয়াদেবীকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে দাসপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসা শুরুর পরেই তাঁর মৃত্যু হয়।
পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, এই প্রথম নয়। এর আগেও নারকেল গাছের ডাল কাটা নিয়ে দুই পরিবারে গণ্ডগোল হয়েছিল। পরে অবশ্য স্থানীয় বাসিন্দারা ওই গণ্ডগোল মিটিয়ে দেন। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কল্পনাদেবী মাঝেমধ্যেই বারিক পরিবারের উদ্দেশে কটূক্তি করতেন। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, দু’-আড়াই বছর আগে পূর্ব পাড়ায় বাড়ি করে বসবাস শুরু করেন শুকদেব। প্রতিবেশী কারও সঙ্গেই সুসম্পর্ক ছিল না তাঁদের। স্থানীয় পরেশ জানার অভিযোগ, “ইদানিং শুকদেবের বাড়িতে অপরিচিত মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত চলছে আড্ডা, মদ্যপান। আমরাও প্রতিবাদ করতে গিয়ে কল্পনাদেবীর গালি খেয়েছি।’’
সোমবার সন্ধ্যায় বিজয়াদেবীর মৃত্যুর খবর চাউর হতেই বাসিন্দারা শুকদেব জানার বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। রাতেই আনন্দ বারিকের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় তারক, শুকদেব ও কল্পনা জানাকে। মঙ্গলবার ঘাটাল আদালতের বিচারক কল্পনাদেবীকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত এবং তারক ও শুকদেবের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।