—প্রতীকী চিত্র।
ধারের টাকা শোধ করবে বলে বাড়ি থেকে মদের আসরে ডেকে নিয়ে গিয়ে প্রতিবেশীকে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে খুনের অভিযোগ উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে। কাঁথি থানা এলাকার দেশপ্রাণ ব্লকের আমতলিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত ব্যক্তির নাম গোবিন্দ পাত্র (৪২)। ঘটনার খবর পেয়েই উত্তেজিত গ্রামবাসীরা অভিযুক্তকে পাকড়াও করে বেধড়ক মারধর করেন। তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে কাঁথি থানার পুলিশ এসে অভিযুক্ত ও তাঁর এক সঙ্গীকে পাকড়াও করেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পেশায় ব্যবসায়ী ও সুদের কারবারি গোবিন্দ পূর্ব আমতলিয়ার বাসিন্দা উত্তম পাত্রকে ৭০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিল। সেই টাকা কিছুতেই ফেরত দিচ্ছিলেন না উত্তম। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে মাঝেমধ্যেই ঝামেলা হত। এর পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে গোবিন্দকে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গ্রামেরই একটি মদের আসরে ডেকে নিয়ে যান উত্তম। অভিযোগ, সেখানে মদ্যপানের পর উত্তম এবং তাঁর সঙ্গীরা গোবিন্দের উপর আক্রমণ করেন। ইট দিয়ে তাঁর মাথা-মুখ থেঁতলে দেওয়া হয়। পরে এলাকা ছেড়েও পালান তাঁরা। পরে স্থানীয়েরাই গোবিন্দকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে কাঁথি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
গোবিন্দর দাদা জনার্দন পাত্র বলেন, ‘‘টাকা ফেরত দেবে বলে সন্ধ্যা থেকে গোবিন্দকে বার বার ফোন করে ডেকেছিল উত্তম। তবে সেই ডাকে সাড়া দেয়নি গোবিন্দ। এর পর উত্তম বাড়িতে এসে জানায় সে কিছু টাকা জোগাড় করতে পেরেছে। এর পর গোবিন্দ উত্তমের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। ওরা একটি মদের আসরে যায়। সেখানে গোবিন্দকে মারে ওরা। গোবিন্দর চিৎকার শুনে ছুটে মাছের ভেড়ির মালিক ছুটে গিয়েছিল। ওকে দেখেই দুষ্কৃতীরা ছুটে পালিয়ে যায়। পরে আমরা যাই। কোনও ক্রমে গোবিন্দকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই ওর মৃত্যু হয়। গ্রামে অবৈধ মদের দোকান যদি না থাকত, তা হলে এই ঘটনা ঘটত না। প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি, এখনই এই অবৈধ মদের কারবার বন্ধ না হলে বড়সড় আন্দোলন করা হবে।’’
শুক্রবার গ্রামবাসীরা অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালান। আগুনও ধরিয়ে দেয়। মারধর করা হয় উত্তমকেও। খবর পেয়ে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত উত্তম পাত্র-সহ তাঁর আর এক সঙ্গী বাটুল মাইতিকে গ্রেফতার করে কাঁথি থানার পুলিশ।