জামবনির বিভিন্ন এলাকায় চলছে পুলিশের নাকা তল্লাশি। নিজস্ব চিত্র ।
ভিন্ রাজ্যে আলু পাচার রুখতে জাতীয় ও রাজ্য সড়কে নজরদারি চলছিলই। তারপর অভিযোগ ওঠে, ঝাড়গ্রামের গ্রামীণ পথ দিয়ে পড়শি রাজ্যে চলে যাচ্ছে আলুর গাড়ি। এ বার তাই গ্রামীণ এলাকাতেও শুরু হল নাকা চেকিং।
শুধুমাত্র ঝাড়খণ্ড লাগোয়া জামবনি থানা এলাকায় নতুন করে ৩৯ টি নাকা চেকিং করা হয়েছে। আর জেলাজুড়ে রয়েছে ৭৪টি নাকা চেকিং।পাশাপাশি সিসি ক্যামেরায় চলছে নজরদারি। গত তিনদিনে ঝাড়গ্রাম ও জামবনি থানার পুলিশ সাতজনকে গ্রেফতারও করেছে। এর মধ্যে জামবনি ব্লকের পড়িহিটি অঞ্চল যুব তৃণমূলের সভাপতিও রয়েছেন। ওই সাতজনের বিরুদ্ধে ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়ার মামলা রুজু হয়েছে। তবে গেরুয়া শিবিরের দাবি, এই সাতজন আলু পাচারে যুক্ত ছিল। ধৃতদের মধ্যে দু’জনের বাড়ি বাঁকুড়ার লুড়কা গ্রামে। দু’জন পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা টাউনের বাসিন্দা। বাকি তিনজন জামবনিরই বাসিন্দা।
গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে আলুর গাড়ি চলাচলের কথা মানছেন জামবনি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ফকির মান্ডি। ফকির বলছেন, ‘‘জামবনির গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে আলুর গাড়ি চলত। বিষয়টি কম-বেশি সবাই জানত। গত দু’দিন ধরে ধরপাকড়ের জন্য এখন আলুর গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে।’’ বিজেপির জামবনি মণ্ডল সভাপতি ভীম সরেনও বলেন, ‘‘দিনে-রাতে জামবনির গ্রামীণ রাস্তায় আলুর গাড়ি যেত। তার কাটমানি তৃণমূল নেতাদের পকেটে ঢুকত। সঠিক ভাবে তদন্ত হলে অনেক নাম বেরিয়ে আসবে।’’
ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানো যাবে না, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৭ নভেম্বর থেকে ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন সীমানায় কড়া নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ। তারপরই গ্রামীণ রাস্তায় আলু বোঝাই লরি চলাচলের অভিযোগ ওঠে। সেই খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ঝাড়খণ্ড সীমানায় জামবনির সোনামুখিতে গ্রামীণ রাস্তায় হাজির হন কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না।
সম্প্রতি সমাজ মাধ্যমে ঢ্যাংবহড়ায় একটি আলু বোঝাই লরি ফেঁসে যাওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। তারপরই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি গ্রামপথে আলুর লরি ঝাড়খণ্ডে যাচ্ছে! আগে জামবনির ঝাড়খণ্ড সীমানায় চিচিড়ার জাতীয় সড়কে ও ধড়সা রাস্তায় পুলিশের নাকা চেকিং ছিল। এখন গ্রামীণ পথেও নাকা শুরু হয়েছে। জামবনিতে নতুন করে ৩৯টি নাকা চেকিং হয়েছে। পাশাপাশি শুরু হয়েছে আন্তঃজেলা নাকা। ওড়িশা সীমানায় নয়াগ্রামের ধুমসাই, ছোট ধানশোলা, চাউলখুলিয়ায় নাকা চেকিং ছিল। এখন পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে নয়াগ্রাম ঢুকতেই ডাহিতে নাকা চেকিং শুরু হয়েছে। গোপীবল্লভপুর থানার হাতিবাড়ি ও নুড়িশোলে নাকা চেকিং রয়েছে। কোথাও দু’জন, আবার কোথাও চারজন নাকায় রয়েছেন।
ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) গুলাম সারওয়ার বলেন, ‘‘জামবনি, বেলপাহাড়ি, বিনপুর, লালগড়ে সাতটি নাকা চেকিং পয়েন্ট ছিল। এখন বাড়িয়ে ৫৪টি নাকা চেকিং করা হয়েছে। সেখানে পুলিশের ২৪ ঘন্টা কড়া নজরদারি রয়েছে।’’