ফের খুন কেশপুরে। এ বার গোলাড়ের কেঁওসায়। চিত্ত ভুঁইয়া (৪২) নামে ওই যুবক মাথায় গুরুতর চোট পেয়েছিলেন। কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
চিত্ত তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। শুক্রবার সকালে কেঁওসায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষও হয়। স্থানীয় এক সূত্রের দাবি, সংঘর্ষের সময়ই মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন চিত্ত। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, রাজনৈতিক সংঘর্ষের কোনও ঘটনা ঘটেনি। পারিবারিক বিবাদে জড়িয়ে চোট পেয়েছিলেন চিত্ত। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “কেশপুরে একজন মারা গিয়েছেন। ওটা পারিবারিক সমস্যা, গ্রাম্য বিবাদ। তাও পুলিশকে বলেছি সব দিক খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে।” পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘কেশপুরের ঘটনায় সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, কেঁওসায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী রয়েছে। এক দিকে রয়েছে বুথ সভাপতি তরুণ ভুঁইয়ার অনুগামীরা, অন্য দিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তরুণ ঘোষের অনুগামীরা। তরুণ দলের অন্দরে তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। যিনি খুন হয়েছেন, সেই চিত্তও তরুণ ঘনিষ্ঠ ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে আচমকাই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়ায়। কয়েকজন জখম হন। গুরুতর জখম হন চিত্তই। তাঁর মাথায় লাঠির আঘাত লাগে। রক্তক্ষরণ হয়। গোলমালের কথা মানছে পুলিশ। তবে পুলিশেরও বক্তব্য, পারিবারিক সমস্যা থেকেই এই গোলমাল হয়েছে। ঘটনার পরে মদন ভুঁইয়া নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
কেশপুরে অশান্তি নতুন নয়। মাঝেমধ্যেই গুলি-বোমায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পশ্চিম মেদিনীপুরের এই তল্লাট। দিন কয়েক আগেও এখানে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। এ দিন সকালে গোলাড়ের কেঁওসায় যে গোষ্ঠী কোন্দল হয়েছে পরোক্ষে তা মানছেন তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান। সঞ্জয় বলেন, “সকালে কেঁওসায় সংঘর্ষ হয়েছে। চেঁচুড়া থেকে একদল লোক গিয়ে কেঁওসায় আক্রমণ করে। এ দিন হাট ছিল। তার মধ্যেই এই আক্রমণে তিনজন জখম হয়েছিলেন।” আক্রমণ কি তৃণমূলের এক গোষ্ঠীই করেছে? সঞ্জয়ের জবাব, “সব বহিরাগত।” রাজনৈতিক সংঘর্ষেই কি এই খুন? তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতির মন্তব্য, “কী থেকে কী হয়েছে, সব পুলিশ দেখছে।”