সাত মাস মেলেনি মিড-ডে মিলের বরাদ্দ টাকা, সমস্যা

গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে মিড-ডে মিলের টাকা মিলছে না। সমস্যায় কেশপুর ব্লকের প্রায় পাঁচশো বিদ্যালয়। স্কুল শিক্ষকদের অভিযোগ, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে টাকা মেলেনি। ফলে সব্জি, মশলা থেকে জ্বালানি - সব কিছুই দীর্ঘদিন ধরে ধারে কিনতে অসুবিধেয় পড়তে হচ্ছে। তাই অবিলম্বে মিড-ডে মিলের বরাদ্দ টাকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৫ ০১:১১
Share:

গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে মিড-ডে মিলের টাকা মিলছে না। সমস্যায় কেশপুর ব্লকের প্রায় পাঁচশো বিদ্যালয়।

Advertisement

স্কুল শিক্ষকদের অভিযোগ, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে টাকা মেলেনি। ফলে সব্জি, মশলা থেকে জ্বালানি - সব কিছুই দীর্ঘদিন ধরে ধারে কিনতে অসুবিধেয় পড়তে হচ্ছে। তাই অবিলম্বে মিড-ডে মিলের বরাদ্দ টাকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকেরা।

এতদিন কেন টাকা মেলেনি? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শন করা হয়। তাতে দেখা যায়, স্কুলগুলির দেখানো ছাত্রছাত্রী সংখ্যায় গরমিল রয়েছে। অনেকক্ষেত্রেই স্কুলগুলি যত ছাত্রছাত্রী দেখিয়েছে, স্কুলে গিয়ে সেই সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর দেখা মেলেনি। তাই ব্লকে মিড-ডে মিলের টাকা পৌঁছলেও তা স্কুলগুলিকে বণ্টন করা হয়নি। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিদর্শনের পর নতুন করে সমস্ত স্কুলকে ছাত্রছাত্রীর পরিসংখ্যান জানাতে বলা হয়েছে। সেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে বর্তমানে যাতে মিড ডে মিল চালাতে অসুবিধে না হয় সে জন্য আগের হিসেব অনুয়ায়ী বরাদ্দ অর্থ দিয়ে দেওয়া হবে। কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ জগন্নাথ মিদ্যা বলেন, “সমস্যাটি মিটে গিয়েছে। এ বার শীঘ্রই সব স্কুলকেই টাকা দিয়ে দেওয়া হবে।” কেশপুরের বিডিও জামিল আখতারও বলেন, “কিছু ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রী কম ছিল বলে দেখা গিয়েছিল। তার কারণ জানার পরেই টাকা বণ্টন শুরু হয়েছে।”

Advertisement

কেশপুর ব্লকে শিশু শিক্ষা কেন্দ্র, মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় মিলিয়ে প্রায় পাঁচশোর কাছাকাছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সম্প্রতি কোন স্কুলে কতজন ছাত্রছাত্রী মিড ডে মিল খায়, তা পরিদর্শন করতে গিয়ে ব্লক প্রশাসন জানতে পারে, কিছু স্কুল ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেশি দেখিয়ে মিড-ডে মিলের টাকা নিচ্ছে। তা জানার পরেই সমস্ত স্কুলকে নতুন করে ছাত্রছাত্রীর হিসাব পাঠাতে বলা হয়। যদিও বেশিরভাগ স্কুলই সেই রিপোর্ট জমা দেয়নি বলে অভিযোগ। অনেক স্কুল টাকা পাঠাতে দেরিও করে। ফলে ব্লক প্রশাসনও টাকা ছাড়েনি। এরফলে সমস্যা মেটাতে দেরি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেশপুরের একটি মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘স্কুলের রোস্টার অনুযায়ী ছাত্রছাত্রী রোজ উপস্থিত থাকেনা। তাছাড়া পরিদর্শনের সময় বিভিন্ন পরীক্ষা থাকায় এমনিতেই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কম ছিল। ফলে এই বিষয়টি উঠে এসেছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিগত কয়েক মাস মিড-ডে মিলের টাকা না মেলায় জিনিসপত্র কিনতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে।’’

এ বিষয়ে তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতা তথা মুণ্ডুলিকা বিদ্যাপীঠের শিক্ষক চঞ্চল হাজরা বলেন, “আমরাও চাই না কোনও স্কুল বাড়িয়ে ছাত্র সংখ্যা দেখাক। কিন্তু প্রশাসন যে সময় পরিদর্শন করেছিল সেই সময় সবে পরীক্ষা শেষ হয়েছে। সাধারণত, ওই সময় গ্রামের স্কুলে ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি কিছুটা কম থাকে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘এমন ভাবার কারণ নেই যে সব স্কুল ছাত্র সংখ্যা বাড়িয়ে দেখিয়েছে। তাছাড়াও যদি দু’একটি স্কুলে এমন ঘটনা ঘটেই থাকে, তার জন্য ব্লকের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমস্যায় পড়বে কেন? তাই আমরা দাবি জানিয়েছে, দ্রুত টাকা ছেড়ে দেওয়া হোক।” এরপর থেকে অন্তত দু’মাস ছাড়া যাতে মিড-ডে মিলের টাকা মেলে সেই দাবিও জানান তিনি।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও স্কুলে ছাত্র সংখ্যার হিসাবে গরমিল রয়েছে কিনা পুনরায় তা আরও এক বার খতিয়ে দেখা হবে। আর দু’মাস ছাড়া টাকা দেওয়ার ব্যাপারে ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, প্রকল্পের টাকা সব সময় সঠিক সময়ে আসে এমন নয়। ব্লক টাকা পেলেই স্কুলগুলিকে তা দিয়ে দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement