এখানেই ছাপা হয়েছে দু’হাজার টাকার নোট। ছবিটি তুলেছেন সৌমেশ্বর মণ্ডল।
ম্যাজেন্টা রঙা মহার্ঘ নোটটি এখন অনেকের হাতেই চলে এসেছে। কিন্তু যাঁদের হাতে সেই নোট ছাপা হচ্ছে, তাঁরাই এখনও পাননি দু’হাজার টাকার নতুন নোট। মাস ছয়েক আগেই শালবনি টাঁকশালের কর্মীরা আঁচ করেছিলেন, বাজারে নতুন নোট আসছে। দু’হাজার টাকার নোট ছাপা শুরু হয়েছিল তখনই। কিন্তু এই নোট বাজারে আসার আগে যে পাঁচশো-হাজারের নোট তুলে নেওয়া হবে, সে ব্যাপারে কিছু টের পাননি তাঁরা।
শালবনি নোট মুদ্রণ প্রেসে কঠোর নিরাপত্তায় টাকা ছাপানোর কাজ চলে। এই টাঁকশাল কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় পুলিশের কাছেও নির্ভরশীল নন। পুলিশকে এখানে ঢুকতে হলে অনুমতি লাগে। নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী দিয়ে নজরদারির ব্যবস্থা করেন কর্তৃপক্ষ। আগে সড়কপথে এখান থেকে টাকার বাক্স যেত। কিন্তু ঝক্কি এড়াতে ক্রমে নিজস্ব রেল লাইন তৈরি করে খড়্গপুর-আদ্রা লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। এখন ছাপার পরে রেলপথেই গন্তব্যে চলে যায় নতুন নোট। দু’হাজার টাকার নোটও রেলপথেই বেরোচ্ছে টাঁকশাল থেকে।
দু’হাজার টাকার কত নোট ছাপা হল এত দিনে? নোট মুদ্রণ প্রেসের এক আধিকারিকের জবাব, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রয়োজন মতো যে পরিমাণ নোট ছাপানোর কথা বলেছিল, সেই মতোই কাজ চলছে। তবে এই সব তথ্য ভীষণ গোপনীয়। এ নিয়ে কিছুই বলা যাবে না।’’ টাঁকশাল সূত্রের খবর, আগে দশ ও এক হাজার টাকার নোট যেখানে ছাপা হত, সেই অংশের থেকে আরও ভেতরে ছাপা হচ্ছে দু’হাজারের নোট। কিন্তু সে এলাকাটি ঠিক কোথায়, তা টাঁকশালে কর্মরত বহু আধিকারিকও দেখেননি। টাঁকশালের এক কর্মীর কথায়, ‘দু’হাজারের নোট ছাপার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়েছে। যাতে এই সংক্রান্ত তথ্য কোনও ভাবে বাইরে না আসে।’’
আর চাকরির শর্তাবলি মেনে সেই গোপনীয়তা রক্ষা করেছেন শালবনি টাঁকশালের কর্মীরা। কিন্তু এখন তাঁদের অনেকেরই আক্ষেপ, যে নতুন নোট তাঁরা ছাপলেন, তা তো হাতে আসছে না! এক কর্মীর কথায়, ‘‘আমাদের এখানে স্টেট ব্যাঙ্কের যে শাখাটি রয়েছে, সেখানে নতুন দু’হাজারের নোট আসেনি। তাই এটিএমে পুরনো একশো টাকার নোটই বেরোচ্ছে।’’