প্রতীকী ছবি।
কয়েক দিন ধরেই বাড়ি ফেরার জন্য এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করেছিলেন। শেষমেশ বাসও মিলেছিল। বাড়িতে ফোন করে ফেরার কথা বলেছিলেন। হাসি ফুটেছিল পরিজনেদের মুখে। সেই হাসি অবশ্য স্থায়ী হল না।
মুম্বইয়ের একটি হোটেলের কর্মী সুদর্শন মণ্ডলের (৩৬) মৃত্যুর খবর বিশ্বাসই হচ্ছে না পিংলার জলচক-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জোহাট গ্রামের বাসিন্দাদের। সুদর্শনের বাড়িতে আছেন বিধবা মা, স্ত্রী ও বছর দশেকের ছেলে। খবর শোনার পর থেকেই মুর্চ্ছা যাচ্ছেন স্ত্রী ও মা। স্ত্রী রিনা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “সাইকেলে করে বাসের টাকা দিতে গিয়েছিল। তারপর থেকেই জ্বর। আমি ডাক্তার দেখাতে বলি। তারপর ওষুধ খেয়ে কিছুটা সুস্থ হয়েছিল। বাসে শশা-মুড়ি খেয়েছে বলেছিল। খুশিতেই ছিল। হঠাৎ যে কী হল! জ্বরের ওষুধ খাওয়ার পরে যন্ত্রণায় ছটপট করছিল শুনলাম।’’
সব মিলিয়ে ৩৫ জন যাত্রী নিয়ে রবিবার রাতে মুম্বই থেকে ওই বাস ছেড়েছিল। সুদর্শনের মৃত্যু হয় মঙ্গলবার সকালে। তারপরে কমবেশি ২৪ ঘণ্টা মৃতদেহ নিয়েই বাস চলে। বুধবার সকালে বাসটি মেদিনীপুরে ঢোকে। দিব্যেন্দু মাইতি নামে ওই বাসের এক যাত্রী বলেন, “সোমবার রাতের পরে ওঁর জ্বর এসেছিল। হাতের কাছে জ্বরের ওষুধ ছিল। সেটা দেওয়া হয়। কিন্তু কিছু করা গেল না।” আরেক যাত্রী শর্মিষ্ঠা বেরার কথায়, ‘‘বাসের মধ্যে করোনার উপসর্গ নিয়ে একজন মারা গেল। সেই মৃতদেহের পাশে ২৪ ঘণ্টা কাটালাম। ভয় করছে।’’
প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব বাসযাত্রী, চালক ও খালাসিকে পিংলার ক্ষ্মীরাইতে সরকারি নিভৃতবাস কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। মৃতদেহের করোনা পরীক্ষার জন্য তাঁর দেহের লালরস পাঠানো হয়েছে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে। ওই হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় জানান, করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পরে দেহ ছাড়া হবে।