মেদিনীপুর-কেশপুর রাস্তা বেহাল। কোলসান্ডায় সৌমেশ্বর মণ্ডলের ছবি।
রাস্তা কার, তা নিয়ে চাপানউতোর। আর তাতেই রাস্তা সংস্কারের কাজ আপাতত শিকেয়।
পূর্ত দফতর জানিয়ে দিচ্ছে, ওই সব রাস্তা তাদের নয়। জেলা পরিষদ বলছে, রাস্তা তাদেরও নয়। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনাতেও রাস্তা তৈরি হয়নি। তাহলে সারানোর দায় নেবে কে? তাই রাস্তার মালিকের খোঁজ করতে এ বার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের শরণাপন্ন হচ্ছে জেলা পরিষদ। তাতেও সন্দেহ। সব রাস্তার অভিভাবকের হদিস মিলবে তো?
দীর্ঘদিন বেহাল মেদিনীপুর-কেশপুর রাস্তা। পূর্ত দফতর জানিয়েছে, শীঘ্রই রাস্তা সংস্কার হবে। পাশাপাশি সম্প্রসারণও হবে। এই রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। কিন্তু গোয়ালতোড় থেকে হুমগড়, নেড়াদেউল থেকে ঝাঁকরা হয়ে কালিকাপুর, দাঁতন থেকে জাহালদা, চকমকরামপুর থেকে তেমাথানি, ধাকিদা থেকে সন্ধিপুর— জেলা জুড়েই এমন অনেক বেহাল রাস্তা। অভিযোগ, এর মধ্যে অনেক রাস্তারই মালিক কে, জানে না কেউ।
যে সব রাস্তার রক্ষাণাবেক্ষণকারী কর্তৃপক্ষের হদিস মিলেছে, সেগুলিও পূর্ত দফতরকে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে জেলা পরিষদ। পূর্ত দফতরের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হস্তান্তর সম্পন্ন হলে রাস্তা সংস্কার শুরু হবে।” কিন্তু যে সব রাস্তার মালিক নেই, তা নিয়েই ভাবনা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের সরস মন্তব্য, ‘‘জীবনে অনেক কিছুর সন্ধানে ঘুরেছি। রাস্তার মালিক খুঁজতে এ ভাবে পথে নামতে হবে, ভাবিনি।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কখনও পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর আবার কখনও জেলা পরিষদের অর্থে তৈরি হয়েছিল সেই সব রাস্তা। জমির মালিকানা থেকে গিয়েছে কৃষকদেরই। সে পথের অভিভাবক মিলবে কী ভাবে? পূর্ত দফতর জানিয়ে দিয়েছে, শুধু রাস্তার দায়িত্ব হস্তান্তর করলে হবে না। জমিও বুঝিয়ে দিতে হবে। তবেই তারা কোনও রাস্তার দায়িত্ব নেবেন। এ বিষয়ে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি জানান, জেলার অনেকগুলি রাস্তার হাল খারাপ। সব রাস্তা সংস্কারের সামর্থ্য জেলা পরিষদের নেই। আবার অভিভাবক না মেলায় পূর্ত দফতরও সংস্কারে রাজি হচ্ছে না। তাই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। যাতে রাস্তার মালিকের সন্ধান মেলে। একইসঙ্গে, বেহাল রাস্তা সংস্কারের জন্য পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর ও গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল থেকেও যাতে অর্থ মেলে সে জন্যও আবেদন করা হবে বলে জানান তিনি।