—ফাইল চিত্র।
কাল, শনিবার মেদিনীপুর সফরে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জেলা শহরে জনসভা রয়েছে তাঁর। আড়ালে জেলা বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ জানাচ্ছেন, শনিবার মেদিনীপুরে ‘মেগা শো’ হতে চলেছে। এই সভা যোগদান মেলায় রূপান্তরিত হতে পারে। সেই মতোই প্রস্তুতি সারা হচ্ছে।
মন্ত্রিত্ব ও বিধায়ক পদে ইস্তফার পরে বৃহস্পতিবারই তৃণমূলের সদস্যপদও ছেড়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। শোনা যাচ্ছে, বিজেপিতে যোগ দিয়ে মেদিনীপুরে শাহের সভামঞ্চে থাকতে পারেন শুভেন্দু। শুভেন্দু-অনুগামী কয়েকজন নেতাও না কি ওই দিন বিজেপিতে যাবেন। ওই নেতাদের মধ্যে দুই মেদিনীপুরের পাশাপাশি ঝাড়গ্রামের একাধিক নেতাও না কি রয়েছেন।
শনিবার ঠিক কতজন তৃণমূলের ‘হেভিওয়েট’ নেতা বিজেপিতে আসছেন? বৃহস্পতিবার সভাস্থল ঘুরে দেখার ফাঁকে বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শমিত দাশের জবাব, ‘‘আমাদের কাছে যাঁরা যোগদান করেন, তাঁরা সবাই হেভিওয়েট, সবার গুরুত্ব একই।’’ সভায় না কি বড় যোগদান হবে? সদুত্তর এড়িয়ে শমিত বলেন, ‘‘শনিবার মেদিনীপুরে যোগদান তো হবেই। আপনারাও জানেন, আমিও জানি। অবশ্য নামগুলি আমি জানি না। আমাদের রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করছেন, কে এখানে যোগদান করবেন, কে পরে যোগদান করবেন।’’ যোগদান নিয়ে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘এ ক্ষেত্রে একটু সাসপেন্স থাকা ভাল!’’
বিভিন্ন মহলে জল্পনা, শুভেন্দু তাঁর অনুগামী কয়েকজন নেতাকে সঙ্গে নিয়েই শনিবার মেদিনীপুরের জনসভায় আসবেন। ওই দলে থাকতে পারেন অমূল্য মাইতি, তপন দত্ত, রমাপ্রসাদ গিরি, প্রণব বসুরা। মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রণব অবশ্য এ দিন দাবি করেন, ‘‘আমি এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি।’’ তপন অবশ্য জানাচ্ছেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী যেখানে যেতে বলবেন, আমি সেখানেই যাব। ওঁর মতেই আমার মত।’’ জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদদেরও ঘোষণা, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী যেদিকে থাকবেন, আমরাও সেদিকে থাকব।’’ শোনা যাচ্ছে, দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলার বেশ কয়েকজন অনুগামী- নেতাকেই শনিবার সভায় দেখা যেতে পারে। সভাতেই তাঁরা তৃণমূল ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগদান করবেন। সভাস্থলে দু’টি মঞ্চ হওয়ার কথা। একটি মঞ্চে অমিত শাহেরা থাকবেন। অন্য মঞ্চে দলের রাজ্য নেতৃত্ব থাকবেন। ইতিমধ্যে মেদিনীপুরে পৌঁছেছেন ‘স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ’- এর (এসপিজি) অফিসারেরা। এ দিন সভাস্থলে ‘অ্যাডভান্স সিকিউরিটি লিয়াজঁ’ (এএসএল) বৈঠকও হয়েছে। শাহের যাত্রাপথের পরিকল্পনার দায়িত্বে থাকবে এসপিজি। শীঘ্রই রুট চূড়ান্ত হবে।
শুভেন্দুকে ঘিরে এমনিতেই আগ্রহ ও কৌতূহলের পাহাড় জমে রয়েছে। তৃণমূলের থেকে দূরত্ব স্পষ্ট করে গত কয়েক মাস ধরে রাজনৈতিক মঞ্চ এড়িয়েছেন তিনি। অরাজনৈতিক মঞ্চ ব্যবহার করে তাঁর একের পর এক সভা ঘিরে জল্পনাও দেখা দেয়। নানা ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যও শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। এক সময়ে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘রামনগরে মেগা শো হবে। সে দিন অনেক কিছু বলব।’’ রামনগরে সমবায় সপ্তাহের সভায় অবশ্য বড় কোনও ঘোষণা ছিল না তাঁর। তবে শুভেন্দুকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘যা করতে হয় তা বলতে নেই।’’
কাল, শনিবারই হয়তো অনেক জল্পনার অবসান হতে চলেছে। শুধু শুভেন্দু নন, ‘পদ্মাসনে’ বসতে পারেন তাঁর অনুগামী বলে পরিচিত নেতারাও। এক অনুগামী নেতা স্পষ্টই জানাচ্ছেন, ‘‘শনিবার মেদিনীপুরের সভায় যাচ্ছি। দেখা হবে।’’