সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র
লাল কালিতে লেখা মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার উদ্ধার হল মেদিনীপুর পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রাঙামাটিতে। পোস্টারে নিশানা এলাকার কয়েকজন তৃণমূল কর্মী। বেআইনি জমির কারবারের অভিযোগ তুলেই ওই পোস্টারগুলি সাঁটানো হয়েছিল।
মঙ্গলবার সকালে এই ঘটনায় শহরে শোরগোল পড়ে। তবে তৃণমূল ও বিজেপি দু’দলেরই দাবি, এই পোস্টারের সঙ্গে মাওবাদীদের সম্পর্ক নেই। বিজেপির মতে, এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের ফল। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপিই এই পোস্টার দিয়েছে। পুলিশ এসে পরে পোস্টারগুলি খুলে নিয়ে যায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। পোস্টার কে লাগিয়েছে আমরা খুঁজে বের করব।’’
ওই পোস্টারে পল্টু বসু, রাজু মান্না, মনা রায়, গণেশ মণ্ডলের নাম রয়েছে। চারজনেই এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘‘১২ লক্ষ টাকা নিয়ে জায়গা দাও না। ৩ বছর হল। মরবে তোমরা।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে মেদিনীপুর শহরের রাঙামাটি এলাকায় স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর মদতে অনেকে সরকারি খাস জমি দখল করে বসবাস শুরু করেন। অভিযোগ, বেশ কিছু জমি টাকার বিনিময়ে হাত বদল হয়েছিল। তখন অনেকে টাকা দিয়েও জায়গা পাননি।
পোস্টারে যাঁদের নাম রয়েছে তাঁদের মধ্যে রাজু মান্নার দাবি, ‘‘পুরসভার ২৪ ও ২৫ ওয়ার্ড এলাকার প্রতিটি মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখি। পুজোর পরেও সবার বাড়ি গিয়ে দেখা করে এসেছি। বিজেপি এলাকার দখল নিতে পারছে না বলেই এই পোস্টার দিয়েছে। আমরা জমি সংক্রান্ত কোন ঝামেলায় নেই।’’ পল্টু বসুর দাবি, ‘‘আমি তৃণমূল করি। তাই অনেকে অনেক কিছু বলবে। কে কোথায় কি পোস্টার দিল আমার কিছু বলার নেই।’’ গণেশ মণ্ডলের দাবি, তিনি এখন পুরুলিয়ায় থাকেন। মনা রায়ের দাবি, ‘‘এসব বাজে কথা। এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না।’’
বিজেপির জেলা সম্পাদক অরূপ দাসের দাবি, ‘‘তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা গরীব মানুষের টাকা লুঠ করেছে। কাটমানি নিয়েছে। তাই এলাকায় তাঁদের নামে পোস্টার পড়েছে। তবে এটা মাওবাদী পোস্টার নয়। তৃণমূল কর্মীদের কাটমানির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সমস্যাতেই এই পোস্টার।’’
মেদিনীপুর শহর তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বনাথ পান্ডব বলেন, ‘পুলিশ তদন্ত করে দেখবে। পাশাপাশি দলীয় ভাবেও তদন্ত করা হবে। কোনও কর্মী দোষী হলে দল সিদ্ধান্ত নেবে।’’