ব্যানারে নেই মুখ্যমন্ত্রীর ছবি (বাঁ দিকে)। ভরেনি হলও (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যস্তরের আদিবাসী অনুষ্ঠান। অথচ মঞ্চের ব্যানারে নেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। দর্শকাসনের চারভাগের তিনভাগও ফাঁকা।
এ সব দেখেই রেগে গিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর একটাও ছবি নেই? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে আমি দু’হাজারটা কথা বলছি, সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর একটাও ছবি থাকবে না? এটার জন্য দায়ী কে?’’ মানসের সংযোজন, ‘‘ডিএম, এটা দেখুন এবং তদন্ত করুন। এটা দেখে কিন্তু ভাল লাগল না।’’
মঞ্চে তখন বসে রয়েছেন আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের সচিব ছোটেন ডি লামা, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, উপভোক্তা প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরী, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার প্রমুখ। ক্ষুব্ধ মানস বলেন, ‘‘এখানে (সভাঘরে) স্বল্প সংখ্যক উপস্থিতি নিয়ে মন্ত্রীরা (সন্ধ্যারানিরা) বলেছেন। এই উপস্থিতিটা আমাকেও ব্যথা দিয়েছে। জেলার আদিবাসী দফতর যদি আমাদের সঙ্গে, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করত, কথা বলে নিত, তাহলে তো এই দৈন্যতা প্রকাশ পেত না!’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘এ ভাবে আমাদের সরকারকে অপমান করার অধিকার কারও নেই। এত স্বল্প উপস্থিতি, ভাবা যায়?’’
মঞ্চে উপস্থিত আধিকারিকদের উদ্দেশে মানসকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনাদের মেদিনীপুরের ইতিহাস পড়া উচিত। যে প্রশাসক এখানে আসুন না কেন, তিনি যদি মেদিনীপুরের ইতিহাস না পড়েন, সেটা খুব বেদনার।’’ আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের সচিবের উদ্দেশে সবংয়ের বিধায়ককে বলতে শোনা যায়, ‘‘ম্যাডাম তো পূর্ব মেদিনীপুরে ছিলেন। আপনার দফতরের আধিকারিকদের একটু সতর্ক থাকতে হবে।’’
এ বার মেদিনীপুরে হচ্ছে রাজ্যস্তরের আদিবাসী একাঙ্ক নাটক প্রতিযোগিতা। প্রদ্যোত স্মৃতি সদনে এর আয়োজক আদিবাসী উন্নয়ন দফতর। বুধবার দুপুরে ছিল উদ্বোধন। অসুস্থতার কারণে আসতে পারেননি আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী বুলুচিক বরাইক। তবে তাঁর শুভেচ্ছা-বার্তা উপস্থিত সকলের কাছে পৌঁছে দেন দফতরের সচিব। এই সভাঘরে ৭০০-৮০০ লোক ধরে। কিন্তু এ দিন ছিল মেরেকেটে ২০০-২৫০ লোক। অনুযোগ, আয়োজনের পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল।
কেন মঞ্চের ব্যানারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছিল না, কেন দর্শকাসনের চারভাগের তিনভাগই ফাঁকা ছিল, এ সব প্রশ্ন এড়িয়েছেন আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের সচিব ছোটেন ডি লামা। তিনি কিছুই বলতে চাননি। কিছু বলতে চাননি অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের জেলা আধিকারিক সুরজিৎ পালও। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কিছু বলব না।’’ তবে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘পরিকল্পনায় কোথাও তো একটা ফাঁক ছিলই। দেখছি কেন এটা হল।’’